Gariahat Hawkers : আদি এবং নব্য হকারদের গোষ্ঠী কোন্দল গড়িয়াহাটে – gariahat hawkers are worried after cm mamata banerjee instruction


সোমনাথ মণ্ডল
মাথার উপরে কালো ত্রিপল। বর্ষাকাল হলেও, ঘেমেনেয়ে একশা বছর পঞ্চান্নর এক প্রৌঢ়। ক্রেতা দেখলেই হেঁকে বলছেন, ‘এদিকে আসুন। দেড়শোয় বিছানার চাদর। ডিসকাউন্ট আছে।’ একই ফুটপাথে ঠিক উল্টোদিকের হকারের মাথার উপরে ঘুরছে ছোট পাখা, বাজছে গানও।সাজানো-গোছানো টিনের শেড দেওয়া দোকানে ব্যবসা করছেন তিনি। গড়িয়াহাটের ফুটপাথে এমনই বৈপরীত্যের ছবি দেখা যাচ্ছে করোনার পরে। নেপথ্যে, আদি এবং নব্য হকারদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কাহিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটপাথ সমস্যা মেটাতে কমিটি গড়ে দিয়েছেন। তারা এক মাসের মধ্যে রিপোর্টও দেবেন। গড়িয়াহাটের ক্ষেত্রে কাদের উপরে কোপ পড়বে, তা নিয়ে চিন্তায় দু’পক্ষই।

১৯৯৬ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ‘অপারেশন সানশাইন’-এর জেরে ফুটপাথের ব্যবসা গোটাতে হয়েছিল বহু হকারকে। তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য স্থায়ী ঠিকানার বন্দোবস্ত করা হলেও কয়েক বছরের মধ্যে ফের তাঁরা থিতু হয়েছিলেন সেই পুরোনো ফুটপাথে। ২০২৪ সালে আরও একবার উচ্ছেদ হওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন সকলে।

সাধারণত ফুটপাথের এক-তৃতীয়াংশ জায়গায় হকার বসার কথা। তবে গড়িয়াহাটের চিত্রটা আলাদা। সেখানে ফুটপাথের দু’দিকেই হকার বসে। মাঝখানের রাস্তায় পথচারীদের জন্য। রাস্তার দিকে রেলিং-এর পাশে যাঁরা হকারি করছেন তাঁরা আসলে নব্য। অন্যদিকে, বড় বড় দোকান লাগোয়া দেওয়ালের আদি-দের ব্যবসা।

বালিগঞ্জ হকার্স ইউনিয়ন এবং গড়িয়াহাট ইন্দিরা হকার্স ইউনিয়নের অধীনে ওই এলাকায় প্রায় ৩৬০০ হকার রয়েছেন। প্রত্যেকের দাবি, তাঁদের কাছে টাউন ভেন্ডিং কমিটির পরিচয়পত্র রয়েছে। শেডের ব্যবস্থা করেছে ওই কমিটি। শেডের উদ্বোধনে হাজির হয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।

ফুটপাথের ব্যবসা যেন শাখের করাতের মতো। তাই মনে করছেন সুনীল ঠাকুর। ছোটবেলায় বাবার জামাকাপড়ের দোকানে বসতেন। তাঁর কথায়, ‘মা, স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। অপারেশন সানশাইন আমি দেখেছি। এখন বয়স হয়েছে। এ বার যদি সেই রোজগারও চলে যায়, তা হলে খাব কী?’ একই বক্তব্য সুমন সাহারও।

পথচারীরা রাস্তায়, পাইস হোটেলের বিরিয়ানিতে বন্ধ পথ
তাঁর অভিযোগ, ‘টিনের শেড হয়নি। ত্রিপলের তলায় দোকান। অথচ, ঠিক উল্টো দিকেই লাইন দিয়ে টিনের শেড হয়ে গিয়েছে।’ অপারেশন সানশাইনের সময়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (সলিড-ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট) ছিলেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে তিনি মন্ত্রীও হন।

কান্তির কথায়,‘আমাদের সময়ে গড়িয়াহাট, হাতিবাগান সহ শহরের ২১টি রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য দখলমুক্ত করা হয়েছিল। জঞ্জাল মুক্তও হয়। বিভিন্ন এলাকায় হকারদের জন্য পাঁচ-ছ’টি পুনর্বাসন মার্কেটও করা হয়েছিল। তাঁদের বেশির ভাগ যেতে রাজি হননি। এখন ঠিক কী করতে চাইছে সরকার, তা স্পষ্ট নয়। তাই বিভ্রান্ত হকাররাও।’

স্থানীয় হকার নেতা দেবরাজ ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘গড়িয়াহাটে টাউন ভেন্ডিং কমিটির নিয়ম মেনে ফুটপাথে ব্যবসা করছেন হকাররা। মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমাদের ভরসা রয়েছে। কারও ক্ষতি হবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *