West Bengal Trending News,’চুরি করবে না’, চোখের জল মুছে বাবাকে ‘শিক্ষা’ সেই ২ খুদের – raju das and his daughters video is trending as their shop has removed


চোখের কোণে চিক চিক করছে জল। ললাটে বিন্দু বিন্দু ঘাম। বাবার ‘ঘেমো’ গলায় হাতদুটো বেজিয়ে রেখেছিল ছোট ফ্রক পরা মেয়েটা। মাঝের মধ্যে কেঁদে উঠছিল। ‘হয় চুরি করব, না হলে ডাকাতি’, সংবাদ মাধ্যমের সামনে উঁচু অথচ কাঁপা গলায় কথাগুলো বলছিলেন রাজু দাস। স্কুলের কমলা রঙের ফ্রক পরা মেয়েটা বাবার গলা জাপটে ধরে এরই রাগ গাইল, ‘না বাবা! না’।বোলপুর গার্লস স্কুলের সামনে সরকারি জমির উপর বেআইনিভাবে দোকান চালাচ্ছিলেন বীরভূমের রাজু। নিয়ম মেনেই প্রশাসন সেই দোকান সরিয়েছে। কিন্তু, রাজুর দুই কন্যার চোখের জলে নেটিজেনদের মনে শীতল বাতাস। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া খুদে বারংবার বাবাকে বোঝাচ্ছে, ‘চুরি ভালো কাজ নয়’। নেটপাড়ার গণ্ডি পেরিয়ে সেই দৃশ্য নজরে এসেছে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদেরও। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রাজুর জন্য বিকল্প রুজির কথা ভাবছেন তাঁরা।

সম্প্রতি সমস্ত বেআইনি নির্মাণ বা সরকারি জমি থেকে জবরদখল হঠাতে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুর গার্লস স্কুলের সামনে কোনও অনুমতি ছাড়াই সরকারি জমিতে একটি তেলেভাজার দোকান দিয়েছিলেন রাজু। দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর। একজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, অপরজন পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।

প্রশাসনের তরফে সেই বেআইনিভাবে গড়ে তোলা দোকান ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু, আইনের বিধিনিষেধ না বোঝা রাজুর দুই কন্যা বাবার ভেঙে যাওয়া দোকানের সামনে বসে হাপুস নয়নে কাঁদে। রাজু ভাঙা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বারবার বলছিলেন, তিনি চুরি ডাকাতি করতে চান। কিন্তু, তাঁর ছোট কন্যা বারবার তাঁকে আটকাচ্ছিল। আর এই দৃশ্য দেখে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি অনেকেই।

রাজুর স্ত্রী স্বীকার করে নেন, কোনও অনুমতি এবং প্রয়োজনীয় কাগজ ছাড়াই এই দোকান চালানো হচ্ছিল। তবে এই দোকানটিই যে তাঁদের সংসারের অন্যতম সম্বল, তাও স্বীকার করেছেন তাঁরা। দুই মেয়েকে কী ভাবে মানুষ করবেন! তা নিয়ে রীতিমতো দিশেহারা রাজু-পত্নী।

এদিকে নেটপাড়ার অলি-গলি পেরিয়ে এই দৃশ্য নজরে এসেছে বোলপুরের মহকুমা শাসক অয়ন নাথেরও। তিনি বলেন, ‘ওই দুই স্কুলছাত্রীর কান্নার ভিডিয়ো দেখামাত্রই আমি বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানাই এবং তাঁকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি।’

অন্যদিকে, বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ বলেন, ‘ওই দোকানটি সরকারি জায়গার উপর ছিল। তাই সেই সময় আমার কিছু করার ছিল না। মানবিক দিক থেকে ওঁদের সাহায্য করব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *