বর্তমান সময়ে যেখানে শিশু থেকে বড়রা সকলেই মোবাইলে আসক্ত, পাশাপাশি যুব সমাজের যেভাবে নেশার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, এলাকার ছেলেদের ফুটবল খেলার মধ্যে দিয়ে নিজেকে অন্য ভাবে বাঁচতে শেখাচ্ছেন তাদের ভালোবাসার ‘সুব্রত দা’। তাই কোনওরকম আর্থিক সাহায্য ছাড়াই বিনামূল্যে এই ফুটবল প্রশিক্ষণ করাচ্ছেন তিনি।
ছোটবেলা থেকে সে নিজে একজন ফুটবল খেলোয়াড় হলেও, পায়ে গুরুতর চোটের কারণে বড় কোন ক্লাব খেলতে পারবেন না বলেই আক্ষেপ ছিল তাঁর। তবে বর্তমানে ফুটবলের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকেই, ছোট বড় টুর্নামেন্ট খেলতে বল পায়ে নামেন মাঠে। পাশাপাশি ফুটবল প্রশিক্ষণ ও সংসার চালানোর জন্য হোম ডেলিভারির কাজ করেই মেলে সামান্য কিছু টাকা। তা দিয়েই কেনেন নতুন ফুটবল, ছেলেদের জার্সি সহ অন্যান্য সরঞ্জাম। সুব্রত দার এই কষ্ট দেখে ছাত্ররাও কিছু সময় সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দেয় বলেই জানালেন বছর ২৩ এর এই ফুটবল প্রশিক্ষক।
সুব্রতর ইচ্ছে নিজে বড় ক্লাব খেলতে না পারলেও, যাদের ফুটবল প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তাদের বড় কোন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার। ফুটবল প্রশিক্ষণ শিখতে আসা ছাত্ররাই এই কোচিং সেন্টারের নাম দিয়েছেন’ সুব্রত ফুটবল একাডেমি’। ইতিমধ্যেই সুব্রত বিশ্বাসের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া ফুটবলের ছাত্রদের মধ্যে বারাসাত ফুটবল লীগে পাঁচ জন এবং কলকাতা ফোর্থ ডিভিশন লীগে তিন জন খেলার সুযোগ পেয়েছে। সুব্রত বলেন, ‘আমি চাই ওরা বড় ফুটবলার হোক, ভালো ক্লাবে খেলুক।’
এই ফুটবল কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাত্ররা জানান, বিনামূল্যে ফুটবল প্রশিক্ষণ পেয়ে খুশি তারাও। অন্যান্য জায়গায় যেহেতু টাকার বিনিময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেই জায়গায় অনেক সময় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছেলেদের ফুটবলের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ থাকে না। । সুব্রত ফুটবল একাডেমি তাঁদের বিনামূল্যে ফুটবলের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এখন এই একাডেমির সকল ছাত্রের একটাই লক্ষ্য ভবিষ্যতে সুব্রত বিশ্বাসের মুখ উজ্জ্বল করা। আর একাডেমির এই ছাত্রদের মধ্যে দিয়েই যেন নিজের স্বপ্নকে ছুঁতে চাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফুটবল প্রশিক্ষক সুব্রত বিশ্বাস।