তৃণমূল আমাকে করতেই হবে, জেল থেকে মুক্তি পেয়ে জানালেন আরাবুল – bhangar tmc leader arabul islam give his statement after release from jail


এই সময়, ভাঙড় ও বারুইপুর: কয়েকদিন আগেই বকরি ইদ গেছে। তারও আগে গেছে পবিত্র ঈদ। গত পাঁচ মাস উৎসবের দিনগুলো কেটেছে গারদের ওপারে। অবশেষে জেল থেকে বাড়ি ফিরলেন আরাবুল ইসলাম। তিনি ফিরতে খুশিতে মাতলেন পরিবারের সদস্যরা। বুধবার ভাঙড়ের পোলেরহাটের বাড়িতে ভিড় করেছিল গোটা গ্রামের লোক।বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে পোলেরহাটে বাড়িতে ফিরতেই উচ্ছ্বাসে মাতেন আরাবুল অনুগামীরা। আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় বারুইপুর সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন আরাবুল। বড় কোনও নেতা না থাকলেও এ দিন তাঁকে আনতে বারুইপুরে ভিড় জমান কয়েকশো কর্মী সমর্থক। গাড়ি, ম্যাটাডোর, পিকআপ ভ্যানেও আসেন বহু মানুষ। আরাবুলের ছেলে হাকিমুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য খাদিজা বিবিও উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর ২ টো ২০ নাগাদ সংশোধনাগার থেকে আরাবুল বেরোতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে অনুগামীরা। কে সবার আগে তাঁর গলায় রজনীগন্ধার মালা পরাবে তা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দীর্ঘদিন জেলজীবনে শরীর ভেঙেছে আরাবুলের। গলায় ছিল না পুরোনো তেজও। বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘পাঁচ মাস পরে ফিরছি। আমাকে নিয়ে কে কী বলেছে সে বিষয়ে আমি এখন কিছু বলব না। ৪-৫ দিন পরে আমি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলব।’

ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুলকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ। লোকসভা নির্বাচনে ভাঙড়ের ভোট নিয়ন্ত্রণ করেছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। দল ও সংগঠনে আলগা হয়েছে আরাবুলের রাশ। তাঁকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমিতির কার্যালয় থেকেও তাঁর নেমপ্লেট খুলে দেওয়া হয়।

এ দিন জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে আগামী দিনে তৃণমূল করবেন কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে আরাবুল বলেন, ‘তৃণমূল আমাকে করতেই হবে। আমি আজ থেকে নয়, ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের সঙ্গেই আছি।’ পঞ্চায়েত সমিতিতে তাঁর ঘর বেদখল হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটা ঘর যদি কেউ দখল করে নেয় সেটা পরের কথা। আমি দলের কর্মীদের বলে দিয়েছি ভাঙড়ে ফিরে গিয়ে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবে।’

শওকত মোল্লা তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন। তার জবাবে শওকতের নাম না করে আরাবুল বলেন, ‘আমি জীবনে রাজনীতিতে কারও খুনের চক্রান্ত করিনি। যে বা যারা বলেছে, আমি তা নিয়ে পুলিশের কাছে তদন্ত চাইবো। যারা বলে বেড়াচ্ছে তারা বুঝবে আগামী দিনে।’

‘আমি অসুস্থ…’, জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ‘সংযত’ আরাবুল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে আগামী দিনে বিজেপি বা আইএসএফে যোগদানের সম্ভাবনার কথা ফুৎকারে উড়িয়ে দেন তিনি। নেতাদের চেনা মুখ না থাকলেও ভাঙড়ে ফেরার পথে হাতিশালা, গাবতলা, পোলেরহাট বাজারেও আরাবুলকে দেখতে পেয়ে হাত নাড়ান রিকশাওয়ালা, দোকানদাররা। সাধারণ কর্মী সমর্থকদের পাশে পেয়ে চোখে জল এসে যায় এক সময়ের দাপুটে নেতার।

তিনি বলেন, ‘অনেক প্রধানকে আমি হাতে করে তৈরি করেছি, পদে বসিয়েছি। তারা হয়তো কারও ভয়ে কিংবা চাপের মুখে পড়ে আমার সঙ্গে দেখা করছেন না। আরাবুল ইসলাম শেষ হয়নি, রাজনীতিতে কেউ শেষ হয় না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *