লালাবাজার সূত্রের খবর, এই সুইসাইড নোটে আত্মঘাতী রাকেশ কুমার সাউ লিখেছেন, ‘নিক্কু কুমারী দুবে এবং আমি (আত্মঘাতী রাকেশ কুমার সাউ) একই পাড়ায় বড় হয়েছি। এরপর আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের তৈরি হয়। আমরা বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। এরপরই আমাদের মধ্যে কাস্টের সমস্যা তৈরি হয়। তাই হঠাৎই করোনার সময় আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর আমরা লোকাল পুলিশ স্টেশনে আগে থেকে জানিয়ে আত্মহত্যা করতে চলেছি।’
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণী বয়ানে জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোভিডের সময় সম্পর্ক ভেঙে যাবার পর ওই যুবক রাকেশ তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করত। তিনি বলেন, ‘অন্তরঙ্গ কিছু ছবি ভাইরাল করার কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করত। তাই বাধ্য হয়েই ৭ বছরের সম্পর্ক ভেঙে যাবার পরও গেস্ট হাউসে এসেছিলাম। আমাদের সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানতো। ২ মাস হল অন্য একটি ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। সেই ছেলেটি বজবজেরই ছেলে।’ ওই গেস্ট হাউসে সিসিটিভি ক্যামেরায় কোনও স্টোরেজ নেই এমনটাই লালাবাজার সূত্রে খবর। তাই আশেপাশের বাড়িগুলো সিসিটিভি ফুটেজ লালবাজার সংগ্রহ করেছে। কিন্তু সেখান থেকে বিস্তারিত কিছু বোঝা সম্ভব নয়। কেউ ঢুকলে বা বেরোলে তা বোঝা সম্ভব এমনটাই জানাচ্ছে লালবাজার।
অন্যদিকে, রাকেশ যে পিস্তল ব্যবহার করে গুলি চালায় সেটি কোথা থেকে এল, তাই নিয়েও রহস্য দানা বেঁধেছে। লালবাজার সূত্রের খবর, এই পিস্তলটি সম্পূর্ণ বেআইনি। আত্মঘাতী যুবক সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করত। কার কাছ থেকে বেআইনি অস্ত্রটি পেল যুবক তাই জানার চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। সুইসাইড নোটে আত্মঘাতী যুবক লিখেছে – ‘আমি অস্ত্রটি, গঙ্গাধরে পেয়েছি।’ এই ল্যাঙ্গুয়েজটাই পুলিশ আধিকারিকরা ‘ডিকোড’ করার চেষ্টা করছেন। আত্মঘাতী যুবক, গঙ্গাধর নামের কোন ব্যক্তির কাছ থেকে পিস্তলটি পেয়েছেন কিনা নাকি গঙ্গার ধার থেকে তিনি এই পিস্তল পেয়েছেন সেটাই বোঝার চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশের তদন্তে কি উঠে এলো? সুইসাইড নোটে আত্মঘাতী যুবক কোথাও বলেছেন, মেয়েটি আমার বউ মেয়েটি আমার গার্লফ্রেন্ড। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আত্মঘাতী যুবক বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। আত্মঘাতী যুবকের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই পরিবারের বেশ কিছু সদস্যের সঙ্গে কথা হয়েছে পুলিশের। তারা জানাচ্ছেন, আত্মঘাতী যুবক অনেকদিন ধরেই (প্রায় ২ মাস) মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।