সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই সুভাষ সরকারকে বিজেপি প্রার্থী করা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। দলের একাংশ রীতিমত রাস্তায় নেমে প্রার্থী বদলের দাবি জানান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপি সুভাষ সরকারকেই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করায় দলের বিক্ষুব্ধদের একাংশ জীবন চক্রবর্তীকে নির্দল হিসাবে প্রার্থী করে। নির্বাচনী প্রচারে নেমেও জীবন চক্রবর্তীর স্লোগান ছিল ‘নো ভোট টু সুভাষ’।
সেই সময় বিজেপির তরফে দাবি করা হয় জীবন চক্রবর্তী দল থেকে ‘বহিষ্কৃত নেতা’। লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া লোকসভায় পরাজয় ঘটে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের। ৩ হাজারের কিছু বেশি ভোট পান নির্দল প্রার্থী জীবন চক্রবর্তী। ভোট মিটতেই এবার সেই জীবন চক্রবর্তীকেই দলের প্রাক্তন জেলা পদাধিকারী হিসাবে উল্লেখ করে শোকজ ও সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ পাঠাল বিজেপির রাজ্য শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। গতকাল সেই চিঠি হাতে পাওয়ার পর জীবন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘এতদিন আমাকে বিজেপির বহিষ্কৃত নেতা বলা হচ্ছিল। চিঠিতে আমাকে দলের প্রাক্তন পদাধিকারী হিসাবে উল্লেখ করায় এখন প্রমাণ হল আমি দলেই ছিলাম।’ সময়মতো চিঠির উত্তর তিনি দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, ভোটে তৃণমূলের হয়ে কাজ করে দলকে বিপাকে ফেলেছেন জীবন চক্রবর্তী। তাই তাঁর বিরুদ্ধে দলের রাজ্য শৃঙ্খলা কমিটির এই পদক্ষেপ স্বাভাবিক। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, ‘বিজেপি একটি সুশৃঙ্খল দল। এই দলের সমস্ত নিয়ম নীতি মেনেই রাজনৈতিক কার্যকর্তারা চলেন।…বিজেপি দলের যে নিয়ম নীতি সেটা ওঁর মধ্যে পরিলক্ষিত হয়নি।’
তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের নব নির্বাচিত সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘জীবন চক্রবর্তী তৃণমূলের হয়ে কাজ করেননি। ওই ঘটনা আসলে বিজেপির অন্দরের ঠোকাঠুকির বহিঃপ্রকাশ। বিজেপি তো বলেছিল জীবন ওঁদের দলের লোক নয়। বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার দলের লোককেই শোকজ করছে।’