Bagdah Assembly By Election,সবুজ না গেরুয়া, এবার কোন রং পছন্দ বাগদার? – bagdah assembly by election on wednesday between trinamool and bjp


আশিস নন্দী, বাগদা
সোমবার শেষ হলো প্রচার। বুধবার বাগদা বিধানসভার উপনির্বাচন। এই কেন্দ্রে এ বার লড়াই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। ২০২১ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির টিকিটে বাগদার বিধায়ক হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। লোকসভায় বনগাঁ কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার পর তিনি বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ায় উপনির্বাচন হচ্ছে বাগদায়।কিন্তু লোকসভা ভোটে শিকে ছেঁড়েনি বিশ্বজিতের। বনগাঁয় দ্বিতীয়বারের জন্য জিতে সাংসদ হয়েছেন বিজেপির শান্তনু ঠাকুর। রাজ্যজুড়ে তৃণমূল ভালো ফল করলেও বাগদায় বিজেপির থেকে অনেকটা পিছিয়ে থাকায় চিন্তা বেড়েছে শাসক শিবিরে। গত কয়েক দিন ধরে বাগদা চষে বেড়িয়েছেন তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-মন্ত্রী সুব্রত বক্সী, রথীন ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামী, মমতাবালা ঠাকুর এবং বিশ্বজিৎ দাসরা।

বাগদায় এ বার বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া আটকাতে মরিয়া শাসকদল। রাজ্যের মধ্যে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে বাগদায় তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন ঠাকুরবাড়ির সদস্য, শান্তনু ঠাকুরের জ্যেঠতুতো বোন প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর। অন্যদিকে, জয়ের ধারা বজায় রাখতে মরিয়া গেরুয়া শিবিরও। কিন্তু দলের ‘বহিরাগত’ প্রার্থী বিনয় বিশ্বাসকে মেনে না নিয়ে বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির নির্দল প্রার্থী দেওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে পদ্ম শিবিরে।

উত্তর ২৪ পরগনার একেবারে সীমান্ত লাগোয়া বাগদা বাম জমানায় ফরোয়ার্ড ব্লকের দখলে ছিল। ২০১১ সালে বাগদা থেকে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন উপেন বিশ্বাস। ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেসের জোটের বিধায়ক হয়েছিলেন দুলাল বর। তিনি অবশ্য পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ২০২১ সালে এই কেন্দ্রে বিজেপির বিধায়ক হন বিশ্বজিৎ দাস।

তিনিও পরে তৃণমূলে ফিরে আসেন। বারবার বিধায়ক পরিবর্তন হলেও বাগদার উন্নয়ন সে ভাবে হয়নি। ফলে না পাওয়ার ক্ষোভে ২০১৯ এবং সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বাগদার মানুষ দলবদলুদের থেকে মুখ ফিরিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বাগদা ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটি পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করে। উপনির্বাচনে বাগদা পুনরুদ্ধারে ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধি মধুপর্ণাকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বনগাঁ লোকসভার অধীনে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রেই মতুয়া ভোটারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মতুয়া, নমশূদ্র মিলিয়ে প্রায় ৬৩%। তফসিলি ভোটার রয়েছে প্রায় ১২%। লোকসভা ভোটে সংখ্যালঘু ভোট শাসকদলের পাশে থাকলেও মুখ ফিরিয়েছেন মতুয়া ও নমশূদ্ররা। মতুয়া অধ্যুষিত বাগদা বিধানসভায় রয়েছেন ৩৮৫ জন দলপতি। পাগল, গোঁসাইদের নিয়ে এই দলপতিরাই মতুয়াদের পরিচালনা করেন।

দলপতিদের একটা বড় অংশ তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও অনেকেই রয়েছেন বিজেপি শিবিরে। সদ্য সমাপ্ত লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী অ-মতুয়া বিশ্বজিৎ দাসের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বাগদার মতুয়া ভোটাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলপতি বলেন, ‘প্রার্থী হিসেবে বিশ্বজিৎ দাসকে মতুয়ারা মেনে নিতে পারেননি।’

বাগদায় প্রচার তুঙ্গে, বিরোধী শিবিরে ভাঙন

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধি এবং তৃণমূলের প্রার্থী মধুপর্ণা নতুন মুখ হওয়ায় মতুয়াদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বাগদা কেন্দ্রে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থীদের ভোট কাটাকুটি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী গৌর বিশ্বাসের সমর্থনে সিপিএমের ভোট ফিরে এলে আখেরে উপনির্বাচনে লাভ হতে পারে তৃণমূলের।

বাগদার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘আমরা সকলে মিলে একজোট হয়ে প্রচার করছি। বাগদার রং এ বার সবুজ হবেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *