
হাতিদের নামকরণ গ্রামবাসীদের
শ্যামসুন্দরের কথায়, যদি রামলাল এলাকায় প্রবেশ করে তাহলে মানুষ নিশ্চিন্তে থাকে যে সেটি কেবলমাত্র খাবারের সন্ধান করবে কিন্তু কোনও মানুষের উপর আক্রমণ করবে না। আবার যদি এক দাঁতা বা ফগলু নামের হাতিটি এলাকায় ঢোকে তাহলে মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তার কারণ এই হাতিটি মানুষ দেখলেই তেড়ে যায়। এই ভাবেই একাধিক হাতির নামকরণ করে নিজেদেরকে সুরক্ষিত করছে গ্রামবাসীরা। শ্যামসুন্দর আরও জানান, পুরুষ হাতি ও স্ত্রী হাতীদেরকে চিহ্নিত করে তাদের নাম করা হয়েছে। যেমন, পুরুষ হাতিদের মধ্যে রয়েছে রামলাল, প্রেমলাল, জুরিলাল, শ্যামলাল, ফগলু বা এক দাঁতা, কালিঙ্গা। এর মধ্যে রামলাল সবচেয়ে শান্ত স্বভাবের। মানুষের ভিড়, পটকা, মশাল এইসব কোন কিছুই সে তোয়াক্কা করে না। দিন হোক বা রাত, যে কোনও সময় এলাকায় ঢুকে পড়ে খাবারের সন্ধানে। কিন্তু মানুষের উপর সে কখনও আক্রমণ করে না। কখনও কখনও রাস্তায় গাড়ি আটকেও খাবারের খোঁজ করে।

রাস্তার মাঝে হাতি
আবার প্রেমলাল, জুরিলাল ও শ্যামলাল, এই তিনটি হাতিকে প্রায় একইরকম দেখতে। তিনটেই রামলালের তুলনায় আকারে একটু কম। রয়েছে মাঝারি আকারের দাঁতও। এই তিনটি হাতি আবারা মানুষের ভিড়, পটকা ও মশালকে ভয় পায়। রামলাল এর মতো এই তিনটি হাতি শান্ত স্বভাবের নয়। মাঝেমধ্যে মানুষের উপর আক্রমণ করে। কখনও আবার মানুষ দেখলে তেড়েও আসে। এরপর রয়েছে কালিঙ্গা। এটির দাঁত সবচেয়ে বড়। এই হাতিটি শান্ত স্বভাবের হলেও মানুষ বিরক্ত করলে তাড়া করে। এরপর রয়েছে ফগলু বা এক দাঁতা হাতি। এই হাতিটি সবচেয়ে আক্রমণাত্মক স্বভাবের। মানুষের বিন্দুমাত্র আওয়াজ পেলেই সেই আওয়াজকে অনুসরণ করে তেড়ে আসে। রাতের অন্ধকারে কেউ টর্চ জ্বাললেও সেই আলোকে অনুসরণ করে তেড়ে যায়। তাই এই হাতিকে দেখলেই সতর্ক ও সাবধান হয়ে যায় এলাকার মানুষজন।
এছাড়া রয়েছে স্ত্রী হাতিও। এই হাতিগুলি ছোট ছোট হাতির দলকে নেতৃত্ব দেয়। যেমন রয়েছে কানকাবরী, ডি জে সার্জেন, লেজ ঠুঁটো মাদি বা লেজ কাটা। তবে এই তিনটিই আক্রমণাত্মক স্বভাবের হাতি। কানকাবরী নামের মাদি হাতির কানে সাদা দাগ রয়েছে। তাই এটির এমন নামকরণ। ডি জে সার্জেন নামের এই হাতিটি আবারা কাউকে আক্রমণ করলে সঙ্গে খুব জোরে চিৎকারও করে। আবারা লেজ কাটা থাকায় একটি হাতির নাম দেওয়া হয়েছে লেজ ঠুঁটো মাদি বা লেজ কাটা।