তারপরেই শুরু হয়ে যায় সরকারি জমি জবরদখল। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার রঞ্জন শীলশর্মার রিসর্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি সাইনবোর্ড। এ বার শিলিগুড়ির আর এক কাউন্সিলার দুলাল দত্তের নাম উঠেছে। তিনিও সরকারি জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ।
শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ী সুব্রত সাহার বিরুদ্ধেও সরকারি জমি দখল করে রিসর্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের প্রতিবেশী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সরকারি জমি দখল করে হোটেল তৈরি করার। শিলিগুড়ির প্রয়াত এক তৃণমূল নেতাও ওই এলাকায় সরকারি জমি দখল করে রিসর্ট তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ।
কী করে এই সমস্ত সরকারি জমি দখল হয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার এখানে পর্যটন কেন্দ্র তৈরির কথা ঘোষণা করতেই ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে সামান্য টাকার বিনিময়ে জমির দখল নিয়ে নেয়। রাতারাতি চাষের জমি বদলে তৈরি হয় হোটেল ও রিসর্ট।
খোদ তৃণমূল কাউন্সিলার রঞ্জন শীলশর্মা বলেছেন, ‘আমি সরকারি জমি দখল করেছি, সে কথা অস্বীকার করছি না। আবার সরকারি কাজের জন্য ছেড়েও দিয়েছি। কিন্তু আরও অনেকে জমি দখল করে রেখেছে সেটাও সত্যি।’ কাউন্সিলার দুলাল দত্তের দাবি, তিনি যে জমি নিয়েছিলেন, সেগুলি সরকারি প্রকল্পের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন।
দুলালবাবু বলেন, ‘আমার নাম কেন জড়ানো হচ্ছে জানি না। আমি সরকারি প্রকল্পে জমি দিয়ে দিয়েছি।’ অন্যদিকে, ব্যবসায়ী সুব্রত সাহা বলেন, ‘রাজ্য সরকার চাইলে জমি ফেরত দিয়ে দেব।’ কিন্তু সার্বিক ঘটনায় অবাক গজলডোবা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভাইস চেয়ারম্যান তথা রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তিনি বলেন, ‘কারা সরকারি জমি নিয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। খোঁজ নিতে গেলে দেখা যাচ্ছে, জমিতে অনেকে পাঁচিল দিয়ে রেখেছে। প্রশাসনকে সবই জানানো হয়েছে।’
সুযোগ বুঝে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘নেতাদের কথা শুনলে মনে হয়, কেউই যেন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেন না।’ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘গজলডোবায় সরকারি জমির হরির লুট হয়েছে।’