টোটোচালকের উপস্থিত বুদ্ধিতে উদ্ধার অপহৃত শিশুপুত্র, ধৃত ১ – alipurduar hasimara police rescue child and arrested one for kidnapping case


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: টোটোচালকের উপস্থিত বুদ্ধিতে অপহরণের এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ উদ্ধার করল এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর পাঁচ বছরের ছেলেকে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ আলিপুরদুয়ারের নতুন হাসিমারায় ফাঁকা রাস্তায় পাঁচ বছরের বিকাশ আগরওয়ালকে অপহরণ করে দুই দুষ্কৃতী। তিন সহপাঠীর সঙ্গে স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী আশিস আগরওয়ালের ছেলে বিকাশ পুরোনো হাসিমারায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যাচ্ছিল।আচমকা চা-বাগানের শুনশান এলাকায় বাইক আরোহী দুই যুবক টোটোর সামনে এসে দাঁড়ায়। এরপর টোটোচালকের কপালে রিভলবার ঠেকিয়ে ওই ব্যবসায়ীর ছেলেকে বাইকে তুলে চম্পট দেয় তারা। যাওয়ার আগে টোটোচালকের চোখে কিছু স্প্রে করে তারা। তাতেই চোখ ঝাপসা হয়ে যায়। ঘাবড়ে না গিয়ে টোটোচালক বছর তিরিশের মতিয়ার মিয়াঁ হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি বিশ্বজিৎ দেকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান।

দুই কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি ছোটান ওসি। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কালচিনির কাছে মধু চা বাগানে অপহরণকারীদের মোটরবাইকটির পাশে চলে আসে পুলিশের জিপ। চলন্ত গাড়ি থেকেই ওসি দুই অপহরণকারীর মাঝে বসিয়ে রাখা নাবালককে তুলে নেন নিজের গাড়িতে। ততক্ষণে মোটরবাইকের গতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

‘শিকার’ হাতছাড়া হওয়ায় রাগে কোমর থেকে রিভলবার বের করে হাসিমারা ফাঁড়ির ওসির দিকে তাক করে বাইকের পিছনে বসে থাকা এক দুষ্কৃতী। পুলিশ জিপের চালক গতি বাড়িয়ে বাইকের কাছে আসতেই এক কনস্টেবল ওই দুষ্কৃতীর জামার কলার ধরে পিছনে হেঁচকা টান মারেন। নিমেষে মোটরবাইক থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে হেলমেট পরা ওই দুষ্কৃতী। বিশ্বজিৎবাবু তাকে কাবু করে রিভলবারটি কেড়ে নেন। সেই সুযোগে পালিয়ে যায় বাইক চালক অন্য দুষ্কৃতী।

পরে জানা যায় ধৃত দুষ্কৃতীর নাম বাবলু জশওয়াল এবং সে ওই চাল ব্যবসায়ীর প্রতিবেশী। স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ এরআগে জেলও খেটেছে সে। আদালতে মামলাও চলছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, অপহরণের মূল চক্রী বাবলু তার কয়েকজন শাগরেদকে নিয়ে ব্যবসায়ীর শিশুপুত্রকে অপহরণ করে মোটা টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ছক কষেছিল।

Car Smuggling : ক্যাব চালককে ফাঁদে ফেলে অভিনব কায়দায় গাড়ি ছিনতাই, বিহার থেকে গ্রেফতার ৪

গ্রেপ্তার হওয়া বাবলুকে জেরা করে আরও দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন বাবলুকে আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতে তুলে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের স্প্রে তাঁর চোখে সরাসরি পড়ায় সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন ওই টোটোচালক মতিয়ার।

তিনি বলেন, ‘এলাকার সমস্ত টোটোচালকদের কাছে পুলিশের ফোন নম্বর থাকায় সরাসরি ওসিকে খবর জানানোয় ওই ব্যবসায়ীর শিশুপুত্রকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।’ জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘শুধুমাত্র মোটা টাকা আদায়ের জন্য ওই চাল ব্যবসায়ীর শিশুপুত্রকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু টোটোচালকের উপস্থিত বুদ্ধি ও পুলিশের তৎপরতায় ওই ছক বানচাল করা সম্ভব হয়েছে।’ সন্তানকে ফিরে পেয়ে পুলিশের প্রশংশা করেছেন আশিস।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *