By-election Result,’বুড়ো হাড়ে’ ভেল্কি ভোটে, জয়ের কারিগর ওল্ড গার্ডরা – trinamool congress old leader responsibility for bagda and ranaghat by election success


এই সময়, বাগদা ও রানাঘাট: কোথাও নতুন মুখ এনে বাজিমাত। আবার কোথাও সদ্যসমাপ্ত লোকসভায় হেরে যাওয়া প্রার্থীকেই একমাসের মধ্যে জিতিয়ে আনা। চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলে চমক অনেক। কিন্তু নেপথ্যে কাজ করেছে একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক। লোকসভা থেকে শিক্ষা নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দলকে সাফল্যের পথে অন্তরায় হতে না দেওয়া এবং পুরোনো মুখে ভরসা রাখা।তারই ফল, লোকসভায় পিছিয়ে থাকা বাগদা ও হেরে যাওয়া রানাঘাট পুনরুদ্ধার। দুই ক্ষেত্রেই দলের জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন প্রবীণ নেতারা। লোকসভা ভোটে বিজেপি থেকে এসে টিকিট পাওয়া মুকুটমণি অধিকারীর পরাজয়ের পর তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানের পদে আনা হয়েছিল বর্ষীয়ান নেতা শঙ্কর সিংহকে। দলের অনেকেই এখন বলছেন ‘হেরো’ মুকুটমণির রানাঘাট জয়ের পিছনে ‘বুড়ো হাড়ে ভেলকি’ দেখিয়েছেন শঙ্কর।

সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়েই যেন তরুণ হয়ে ওঠেন বছর সত্তরের শঙ্কর। দলের জেলা সভাপতি, বয়সে তরুণ দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রথমে কয়েকদিন রোজ তিনটি করে কর্মী বৈঠক করেন তিনি। বিধানসভার কোন অঞ্চলে সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, মতুয়াদের একটা অংশ কেন মুখ ফেরাল, সেই উত্তর খুঁজে দুর্বলতা পূরণে যথাযথ পদক্ষেপও করেন শঙ্কর।

এ দিন অবশ্য তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে লড়াই করে এই আসনটা বিজেপির হাত থেকে বের করতে পেরেছি।’ অন্যদিকে, বাগদা কেন্দ্রের গত কয়েক বছরের ইতিহাস বলছে বারবার নেতা বদলায় বাগদা। বাম জমানায় বাগদা ছিল ফরোয়ার্ড ব্লকের হাতে। কিন্তু ২০০৬ সালে বাগদায় তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন দুলাল বর। ২০১১ সালে বাগদা থেকে তৃণমূল বিধায়ক হন সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস।

দুলাল ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হয়ে বাগদা থেকে ফের জয়ী হন। অন্যদিকে, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্র থেকে গত ২০১১ এবং ২০১৬ সালে পরপর দুটো টার্মে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। কিন্তু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০২১ সালে বাগদা থেকে বিধায়ক হন তিনি। যদিও বিজেপির টিকিটে জেতার কয়েক মাস পরেই ফের চলে আসেন তৃণমূলে।

দলে ফিরে বনগাঁ তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি হন বিশ্বজিৎ। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটেও বিশ্বজিৎকেই বনগাঁর প্রার্থী করে তৃণমূল। কিন্তু দলের কোন্দল, অ-মতুয়া মুখের উপরে মতুয়াদের ভরসা না থাকা, দলের পুরোনো কর্মীদের ভোটের ময়দানে নামাতে না পারার জেরে পরাজিত হন বিশ্বজিৎ।

বাগদার মতুয়া ভোট কাছে টানতে ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধি মধুপর্ণা ঠাকুরকে প্রার্থী করে মাস্টারস্ট্রোক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাগদার ১২টি পঞ্চায়েতকে পাখির চোখ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রথীন ঘোষ, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু, নির্মল ঘোষ, গোপাল শেঠ, নারায়ণ গোস্বামীদের মতো পোড় খাওয়া নেতাদের।

উপনির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্তি ‘গোল্লা’! আর‌ও শক্তিশালী তৃণমূল

তৃণমূলের পাশাপাশি টিএমসিপি কর্মীরাও বাগদায় দিনের পর দিন পড়ে থেকে প্রচার চালিয়েছেন। নেতারা মিইয়ে থাকা সংগঠনে ঝাঁকুনি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। দলের পুরোনো কর্মীদের মোটিভেট করেছেন। রথীন বলেন, ‘বাগদায় দলের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করিয়েছি। পুরোনো কর্মীদের ভোটের প্রচারে নামাতে পেরেছি। সব স্তরের কর্মীদের মোটিভেট করাতে পেরেছি। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নকে বাগদার মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্যই বাগদার রং সবুজ হয়েছে।’

বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, ‘মতুয়ারা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ চায়। তাই মধুপর্ণা ঠাকুরকে জয়ী করেছেন।’ বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমার ভোট ছিল কেন্দ্রের। এ বার রাজ্যের ভোট হয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *