কিন্তু এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে দুই বা একাধিক ধর্মাবলম্বী মানুষের এক সঙ্গে কাজ করার অভ্যাস। অমর্ত্যর বক্তব্য, ‘রাজনীতি থেকে সমাজনীতি, স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা সবেতেই হিন্দু-মুসলমানের এক সঙ্গে কাজ করা দরকার। কেউ সঙ্গীতচর্চা করলে তাঁকে বুঝতে হবে আলি আকবর খাঁ আর রবিশঙ্করের কাজের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।’
এই প্রসঙ্গেই তিনি ফের হিন্দু রাষ্ট্র এবং সেই সূত্র ধরে তাজমহলের উদাহরণ টেনে আনেন। নোবেলজয়ীর কথায়, ‘যাঁরা আমাদের দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে চায়, তাঁরা তাজমহলকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ও সুদর্শন স্থাপত্য বলে মনে করেন না। আজকাল শুনতে পাই তাঁরা দাবি করেন, তাজমহলের সঙ্গে নাকি মুসলিমদের কোনও যোগাযোগ নেই। অথচ তাজমহল যিনি বানিয়েছিলেন, অর্থাৎ শাহজাহানের পুত্র হিন্দু শাস্ত্রের প্রথম অনুবাদ করেছিলেন।’
এ দিনের অনুষ্ঠানে বাংলা ও বাঙালিয়ানা নিয়ে একাধিক আলোচনা করেন অমর্ত্য। তাঁর মতে, ‘চর্যাপদ থেকে আজ পর্যন্ত বাঙালির ইতিহাস যদি লক্ষ করেন। তাহলে আমাদের গর্ব করার মতো বহু বিষয় রয়েছে।’ অনুষ্ঠানে সামাজিক সংগঠন ‘নো ইওর নেবার’-এর উদ্যোগে চেয়ার ফর রিডার নামে একটি প্রকল্পের সূচনা করেন নোবেলজয়ী। যে প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের মধ্যেই পড়াশোনার অভ্যাস বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শনিবার আলিপুর মিউজ়িয়ামে একটি অনুষ্ঠানে অমর্ত্যর সঙ্গেই হাজির ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘অমর্ত্যবাবুর একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই আমি নিজের বিধানসভা এলাকায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের প্রসারে কাজ করেছি। যা টার্গেট করেছিলাম তার ৫০ শতাংশ অ্যাচিভ করেছি।’ পাল্টা সৌজন্য ফিরিয়ে দিয়ে অমর্ত্য বলেন, ‘আমার নানা মামুলি কথার মধ্যেও মেয়র যে একটি কথায় কাজ করেছেন, সে জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’