হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ তাঁদের সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়ে দিয়েছেন, এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন। হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে আগামী শুনানির আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর তরফে জানানো হয়েছিল, কোন প্রেক্ষিতে তিনি কী মন্তব্য করেছিলেন, আদালত চাইলে তা হলফনামা আকারে জমা দেবেন তিনি।
ফলে মামলা আগামী দিনে ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সেখানেও তাঁর তরফে একই যুক্তি দেওয়া হবে বলে ব্যাখ্যা আইনজীবীদের। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতে গিয়ে এদিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যেমন বেপরোয়া ভাবে মন্তব্য করা হয়েছে, তাতে তাঁর সম্মানে আঘাত লেগেছে। প্রত্যাশিত ভাবেই হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে রাজ্যপাল বোস বলেন, ‘সত্য বিরাজ করুক। আমি প্রার্থনা করি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে ঈশ্বর আলোর দিশা দিন। আমি বাংলার মানুষের সেবায় নিবেদিত।’
যদিও এক বিবৃতিতে সঞ্জয় বসুর ব্যাখ্যা, ‘যে মন্তব্যের ভিত্তিতে এই মামলা, সেই মন্তব্য অসত্য বা সম্মানহানিকর—এরকম কোনও সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্ট উপনীত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেক মহিলা যে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন, সেটাই তিনি তুলে ধরেছিলেন।’
তাঁর সংযোজন, ‘সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁরও বাকস্বাধীনতা আছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রাজ্যের মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি দায়বদ্ধ এবং যে কোনও ক্ষেত্রেই লিঙ্গ নির্বিশেষে তিনি যে অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। একজন জনপ্রতিনিধি এবং একজন মহিলা হিসাবে তিনি চোখ বুজে থাকতে পারেন না, মহিলাদের যন্ত্রণা সম্পর্কে নীরবও থাকতে পারেন না। মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা কোনও ভাবেই সম্মানহানিকর নয় এবং আমাদের বিশ্বাস, তাঁর মন্তব্যের উপর সার্বিক নিষেধাজ্ঞার কোনও ভিত্তি নেই।’
হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কটাক্ষ, ‘অবিশ্বাস্য! রাজ্যপাল রাজভবন চত্বরে শ্লীলতাহানি, মহিলাদের যৌন নিগ্রহ করে তাঁর সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে বলে দাবি করবেন আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হলো, তিনি এর উপর কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না!! দুঃখিত। আমরা প্রতিদিনই সংবিধান দিবস পালন করি এবং আমরা বলা চালিয়ে যাব।’