Self Employment Department,বেকার জীবন থেকে স্বপ্নের উড়ান, সঙ্গী স্বনিযুক্তি দপ্তর – unemployed becoming self reliant through initiatives of self employment departments of west bengal government


গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর আর পাঁচ জনের মতোই তিনিও মরিয়া হয়ে চাকরি খুঁজেছিলেন। কিন্তু চাকরি পাননি বারাসতের মিঠুন রায়। তাঁর দাদা শিল্পী। কিন্তু মিঠুন সে ভাবে সে দিকে যাননি। এখন সেই মিঠুনই কাজ দিয়েছেন ৫০ জনকে। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের একদল আদিবাসী মহিলা, বছর পাঁচেক আগেও যাঁদের নুন আনতে পান্তা ফুরোতো, এখন তাঁদের তৈরি জিনিসপত্র বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে, হাসি ফুটেছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারে।শিলিগুড়ির নিতুশ্রী ঘোষদাসের তৈরি কাগজ আর মাটির ক্যালাইডোস্কোপও এখন বাজার কাঁপাচ্ছে। এই তিন জন উদাহরণ মাত্র। রাজ্য সরকারের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তরের উদ্যোগে এমন উদাহরণের ছড়াছড়ি বাংলায়। তবে দপ্তরের কর্তারা মনে করছেন, তাঁদের এমন উদ্যোগের কথা অনেকেই জানেন না। ফলে রোজগারের জন্যে আরও যাঁরা হন্যে, তাঁদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর করার চেষ্টা চলছে।

ঋণ দেওয়া থেকে শুরু করে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা–সব দিক থেকেই পাশে রয়েছে স্বনিযুক্তি দপ্তর। মিঠুনের কথাই ধরা যাক। তিনি যখন মাটির ল্যাম্পশেড তৈরি শিখছেন, তখন জানতেনই না যে এ নিয়ে সরকারি সুবিধা পাওয়াও সম্ভব। রাজ্য সরকারের সবলা মেলায় ওয়েস্টবেঙ্গল স্বরোজগার কর্পোরেশন লিমিটেডের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাঁদের মতো শিল্পীদের জন্যে ভর্তুকি-সহ ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিবেকানন্দ স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে তিনি প্রথমে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ পান। তার মধ্যে ৩০% ভর্তুকি। তাতে ব্যবসা অনেকটাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। প্রথম ঋণের টাকা শোধ করে ব্যবসা বাড়ানোর জন্যে ফের সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ঋণ নেন। এ বারও ৩০% ভর্তুকি। সেই ঋণের টাকা নিয়মিত শোধ করে চলেছেন মিঠুন। রাজ্যের তো বটেই দেশেরও বিভিন্ন মেলায়, অনলাইনে তাঁর পণ্য এতটাই জনপ্রিয় যে উৎপাদন অনেকটা বাড়াতে হয়েছে। এখন মিঠুনের ওয়ার্কশপে ৫০ জন কাজ করছেন।

পাঁচ বছর আগে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের একজন মাত্র মহিলা তাঁর তৈরি জৈব আনাজ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এক সবলা মেলায়। সেখানেই সরকারি সুবিধার বিষয়ে জানতে পারেন। সেই সময়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এলাকার মহিলাদের হারিয়ে যাওয়া কিছু ধান জৈব পদ্ধতিতে চাষের প্রশিক্ষণ দেয়।

ওই মহিলাদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। মূলত কালো চাল এবং লাল চাল তৈরি করে এই গোষ্ঠীগুলি। সহজ শর্তে ভর্তুকি-সহ ঋণ পেয়ে গত চার বছরে তাঁদের চাষের এলাকা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। তাঁদের উৎপাদিত চাল বিক্রিরও ব্যবস্থা করেছে স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি দপ্তর। ‘আমন’ নামের মহিলা চাষিদের সংগঠনে এখন প্রায় সাড়ে তিন হাজার সদস্য।

শিলিগুড়ির নিতুশ্রী একলাই তৈরি করেন ক্যালাইডোস্কোপ। কিন্তু তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন। সরকারি সাহায্যে শেষ পর্যন্ত ১৮ জনকে নিয়ে একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। তাঁদের দেড় লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। গোষ্ঠীর সদস্যরা কেউ ঘি তৈরি করেন, তো কেউ সেলাই কিংবা চটের পণ্য। স্বরোজগার দপ্তরই তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করে। ব্যবসা দাঁড়িয়ে গিয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *