হকার সমীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখার কাজ চলার মধ্যেই গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, বেহালা, শ্যামবাজার, হাতিবাগানের ফুটপাথে ফের হকার বসতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। সম্প্রতি পুরসভা এই সব এলাকায় হকার সরিয়ে ফুটপাথ দখলমুক্ত করেছিল। অথচ আম-নাগরিকের বক্তব্য, ফাঁকা জায়গায় আবার হকাররা বসতে শুরু করেছেন। আশঙ্কা, পুজো যত এগিয়ে আসবে হকারদের ভিড় বাড়বে।কলকাতার ফুটপাথে দখলদারি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করার পরে হকার নিয়ন্ত্রণে ঝাঁপিয়েছিল পুরসভা। ফুটপাথ মুক্ত হয়েছিল পথচারীদের জন্যে। সেই শূন্যস্থান ফের পূরণ হতে শুরু করায় হকার নিয়ন্ত্রণে পুর-উদ্যোগের পুরোটাই অশ্বডিম্ব প্রসব কিনা, এখন সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ‘সমীক্ষার কাজ শেষ হলে পুর-আধিকারিকরা হকারদের অনিয়ম ধরতে সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন। ফুটপাথ যাতে পথচারীদের থাকে–সে ব্যাপারে পুরসভা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
তবে ফের যে ভাবে ফুটপাথের ফাঁকা জায়গা দখল হচ্ছে, তাতে মেয়রের আশ্বাসেও নাগরিকদের একাংশ সংশয়ী। গড়িয়াহাটের বাসিন্দা লীলা রায় জানান, গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারী পর্যন্ত ফুটপাথের অনেক জায়গাতেই এখনও প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে হকারদের স্টল রয়েছে। ফুটপাথে দাঁড়িয়েই চলছে কেনাবেচা। পথচারীকে যাতায়াত করতে হচ্ছে কোনও ভাবে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে।
বেহালার সমীর রায়ের কথায়, ‘ছবিটা বদলায়নি। মাঝে কয়েক দিনের জন্যে ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াতের জায়গাটা একটু চওড়া হয়েছিল। আবার যে কে সেই।’ শ্যামবাজারের বাসিন্দা বান্টি দত্ত বলেন, ‘শ্যামবাজার, হাতিবাগান, ফড়িয়াপুকুরে ফুটপাথের ফাঁকা জায়গায় আবার বসতে শুরু করেছেন হকাররা। কমছে চলাচলের জায়গা।’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে পাঁচ দফায় হকার সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়েছে। শহরজুড়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হকারের নাম আপাতত নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও ২০১৫-র হকার সমীক্ষায় শহরে মোট নথিভুক্ত হকারের সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৭৫ হাজার। গত ন’বছরে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা পুর-আধিকারিকদের।
তবে সমীক্ষার কাজ পুরো শেষ না হলে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে পুর-আধিকারিকদের বক্তব্য। হকার সংগঠনের নেতা শক্তিমান ঘোষ, শক্তি মণ্ডল, অসিত সাহার বক্তব্য, শহরে যত হকারই থাকুন না কেন, প্রত্যেককে টাউন ভেন্ডিং কমিটি এবং পুরসভার নিয়ম মেনেই হকারি করতে হবে। পথচারীদের যাতায়াতের জায়গা দখল করে হকারির আর সুযোগ নেই।