Jamal Sardar,সিম পাল্টে শাশুড়িকে ফোনেই ফাঁদে জামাল – police produced sonarpur jamal sardar in baruipur sub divisional court


এই সময়, সোনারপুর ও বারুইপুর: শেষ হলো জামালের কামাল। মুখে মাস্ক পরে, সিম-মোবাইল সেট পাল্টেও শেষরক্ষা হলো না। শাশুড়িকে ফোন করতেই ফেঁসে যায় জামাল। মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাকে জালে তুলে নেয় পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ধরা পড়ে জমি জালিয়াতি চক্রের পান্ডা, মহিলা নির্যাতনকারী সোনারপুরের মাতব্বর জামাল সর্দার।শনিবার তাকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ। ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হলেও হলেও বিচারক তাকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে পুলিশের ঘেরাটোপেও মেজাজ ঠান্ডা হয়নি জামালের।

বারুইপুর আদালতে ঢোকার সময় সে জানায়, ‘আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। যাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছিলাম, তারাই আমাকে ফাঁসিয়েছে।’ তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেয় জামাল। বারুইপুরের পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালী বলেন, ‘ওকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

চলতি মাসের ১০ তারিখ জামালের অত্যাচারের শিকার হয়ে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার প্রতিবেশী এক গৃহবধূ। ওই মহিলার অভিযোগ ছিল, বিচারের নামে জামাল তাঁর পায়ে লোহার শিকল দিয়ে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত বেঁধে রেখেছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ১৬ তারিখ সকালে সোনারপুরে যান বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল।

তার পরই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যম হইচই শুরু করলে বেগতিক দেখে জামাল গা ঢাকা দেয়। সে দিনই সন্ধ্যায় পাঁচিল টপকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় জামালের স্ত্রী ও ছেলে৷ ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় শ্বশুরবাড়ির কাছে কোথাও থাকার পরিকল্পনা থাকলেও পুলিশের নজরদারির ভয়ে জামাল একটি বাগানে রাত কাটায়৷ দিনের আলো ফুটতেই ঘুটিয়ারি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোনারপুরের উপর দিয়েই শিয়ালদহ হয়ে সে সল্টলেকে যায় একজনের কাছে পরামর্শ নিতে।

এর মধ্যেই নিজের পুরোনো মোবাইল ও সিম ফেলে দিয়ে নতুন মোবাইল ও সিম কার্ড কেনে জামাল। সল্টলেকে তার পরিচিতের সঙ্গে আলোচনা করে আত্মসমর্পণের জন্য সোনারপুর থানার কাছে মিশনপল্লিতে যায় সে। কিন্তু আইনজীবী বারণ শুনে সেই পরিকল্পনা বাতিল করে অন্যত্র চলে যায় জামাল। তবে স্ত্রী ও ছেলেকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার জন্য শাশুড়ি ও শালাকে ফোন করে ওই ব্যক্তি।

কিন্তু পরিবারের সদস্যদের নতুন নম্বর থেকে জামাল ফোন করলেই তাকে থানায় তুলে আনছিল পুলিশ। জামালের টাওয়ার লোকেশন দেখে সেখানেও পুলিশের টিম চলে গিয়েছে কয়েকবার। কিন্তু জামালের টিকি ছুঁতে পারেনি পুলিশ। জামালকে ধরতে সোনারপুরের আইসি আশিস দাস কয়েকটি টিম তৈরি করেন।

ভাঙড় ও ক্যানিং থানায় দীর্ঘদিন ওসি থাকার সুবাদে নিজের সমস্ত সোর্সকে অ্যাক্টিভ করে রেখেছিলেন আশিস। তাদেরই একজন জানান, চন্দনেশ্বরের কাছে সন্ধ্যেয় এক ব্যক্তি মুখে মাস্ক পরে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছে। তার আগেই একটি কল রেকর্ডিংয়ে পুলিশ জানতে পারে জামাল চন্দনেশ্বর এলাকায় আসতে পারে।

শিকল বেঁধে মহিলাকে মার, পুলিশের জালে সেই জামাল

ওই সোর্স জামালকে নজরে রাখার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশের টিম ওই এলাকায় গিয়ে তাকে তুলে নেয়। যদিও এ দিন বারুইপুর মহকুমা আদালতে জামালের হেফাজত নিয়ে এক প্রস্থ নাটক হয়। সোনারপুর থানার পুলিশ জামালকে আদালতে তোলার পর সরকারি আইনজীবী সামিউল হক তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন জানান।

তখনই নজরে আসে যে সোনারপুর থানার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকই জামালকে পুলিশি হেফাজতের পরিবর্তে জেল হেফাজতের আবেদন জানিয়েছেন। তা নিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অভিযুক্তের আইনজীবী সুব্রত সর্দার। বিষয়টি নজরে আসতেই তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিককে এজলাসের মধ্যেই ভর্ৎসনা করেন বিচারক।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *