Police Arrest,দিঘা ঘুরিয়ে এনে বাবাকে খুন যুবকের – police arrest a youth for kill his father in daspur


এই সময়, মেদিনীপুর: বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দিঘা ঘুরে আসার দিন সাতেকের মাথায় তাঁকে খুন করল ছেলে। গত ১২ জুলাই বাড়ির কিছুটা দূরে পুকুর থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় দাসপুরের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের সুদাম ভুইয়াঁ (৫৭)র। দু’দিন পরে হাসপাতালে মারা যান তিনি। পুলিশ তদন্তে এলে স্থানীয়রা দাবি করেন, যে কোনও মূল্যে খুনিকে ধরতেই হবে। গ্রামের মধ্যে এ ভাবে একজনকে মেরে দিয়ে চলে যাবে, কখনও মেনে নেওয়া যায় না।প্রথমে কোনও ক্লু না পেলেও পরে সোর্স লাগাতেই কিছু তথ্য হাতে উঠে আসে পুলিশের হাতে। এরপরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রৌঢ়ের ছোট ছেলে চিরঞ্জিৎ ভুইয়াঁকে আটক করা হয়। ঘটনার সাত দিন পরেও অবশ্য তাকে দেখে কিছুই বোঝার উপায় ছিল না। পুলিশি জেরায় শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে চিরঞ্জিৎ। স্বীকার করে, ওই রাতে পুকুরের ধারে অন্ধকারে আগে থেকেই দাঁড়িয়েছিল সে। খাওয়া দাওয়ার পরে তার বাবা হাঁটতে বেরোলে পিছন থেকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘তদন্তে কিছু তথ্য পাওয়ার পরে আমরা প্রৌঢ়ের ছেলেকে গ্রেপ্তার করি। ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ কেন খুন? পুলিশ জানতে পেরেছে, একে মদের নেশা। তার উপর প্রতিদিন লটারি কাটত চিরঞ্জিৎ। বন্ধুদের কাছে প্রচুর দেনা হয়েছিল তার। পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে তিন মাস আগে ভিনরাজ্যে কাজ করতে চলে যায়। সমস্ত ঋণ শোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ মাসের গোড়ায় ছেলেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন সুদাম।

কিছু টাকা দিলেও ছেলের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। এদিকে রাস্তায় রেরোলেই পাওনাদাররা চিরঞ্জিতকে চেপে ধরত বলে অভিযোগ। অপমানও করত। এই নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। নিহত সুদামের স্ত্রী গঙ্গা বলেন, ‘ক’দিন আগে ওর বাবাকে নিয়ে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিল। কী প্ল্যান ছিল জানি না। পাঁচ দিন ছিল। দিঘা থেকে ভালো ভাবেই ফিরে এল বাবা-ছেলে।

ওর সঙ্গে কয়েকজন বন্ধুও গিয়েছিল বলে শুনেছি। গত শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে স্বামীকে গুরুতর জখম অবস্থায় বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার করি। দু’দিন পরে হাসপাতালে মারা যায়। এখন শুনছি, ছোট ছেলে চিরঞ্জিৎ ওকে খুন করেছে। ছেলে হলেও আমি চাই, ওর কঠোর শাস্তি হোক।’

ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে নিজের বাবাকে খুন করার খবর শুনে শনিবার অবাক হয়েছেন প্রতিবেশীরাও। কেন বাবাকে খুন হতে হলো ছেলের হাতে? পুলিশ জানতে পেরেছে, কথামতো বাবা টাকা দিতে না পারায় খুনের পরিকল্পনা করে চিরঞ্জিৎ। ওই রাতে লোহার রড দিয়ে বাবার মাথায় মেরে পুকুরের জলে ফেলে দেয়।

কলকাতা হাইকোর্ট : ছেলেকে ফিরিয়ে দাও, আর্তি নিঃস্ব বাবার

গোঁঙানির শব্দ শুনে এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্যে পরিবারের লোকজন সুদামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। ১৪ তারিখে মৃত্যু হয় তাঁর। স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত মাইতি বলেন, ‘ভাবতেই পারছি না, ছেলে হয়ে বাবাকে এ ভাবে খুন করবে? ও এখন আমাদের কাছে খুনি। এলাকাবাসী হিসেবে আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই।’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী শফিকুল খান বলেন, ‘আমরা পাশাপাশিই বসবাস করি। ছেলে খুন করল অথচ কেউ-ই বুঝতে পারল না। সকলের নজর এড়িয়ে রাতে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তাই কারও নজরে পড়েনি। আমরা পুলিশের কাছে দাবি রেখেছিলাম, ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে দোষীকে গ্রেপ্তার করা হোক। পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করায় আমরা খুশি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *