প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিয়ে দিয়ে দিলে ছেড়ে দেওয়া চলবে না। এ ভাবে চাপ না দিলে অভিভাবকেরা ভয় পাবেন না। আমাদের কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েরা খুবই অ্যাক্টিভ। সারা বছরই ওরা লক্ষ্য রাখে। নিজেদের উদ্যোগে একাধিক নাবালিকার বিয়েও আটকেছে ওরা। তাই স্কুলের পক্ষ থেকে সোমবার ওদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।’
কন্যাশ্রী ক্লাবের এক সদস্যা বলে, ‘ওই ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে ওর বাবা-মাকে যখন আমরা জিজ্ঞেস করি, তখন ওঁরা নানা রকম কথা বলেন। কখনও বলেছেন, মামাবাড়ি গিয়েছে, আবার কখনও বলেছেন, আমাদের বন্ধু নিজেই একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে। এমনকী, আমরা যখন প্রথম ওদের বাড়িতে যাই, তখন প্রথমে পরিবারের লোকজন এবং পরে প্রতিবেশীরাও আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এর পরেই আমরা ঘটনার কথা স্কুলের শিক্ষকদের এবং পুলিশকে জানাই। গত শুক্রবার স্কুলে মিটিং হয়। ওই ছাত্রীর বাড়িতে ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নিই। শনিবার ওদের বাড়িতে আমরা জনা তিরিশেক ছাত্রী ধর্নায় বসি। আমাদের দাবি ছিল, বন্ধুকে স্কুলে ফেরাতে হবে।
অবশেষে ছাত্রীর মা মুচলেকা লিখে দেন, ‘সোমবার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে আসবেন’। সোমবার আমরা অপেক্ষা করছিলাম। মেয়েকে না আনলেও ছাত্রীর বাবা-মা স্কুলে এসেছিলেন। জানিয়েছেন, শরীর খারাপ বলে আজ আসেনি। মঙ্গলবার থেকে স্কুলে আসবে।’ কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যারা বলেন, ‘স্কুলে না পাঠালে ফের আমরা ওর বাড়িতে যাব। প্রয়োজনে প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এখনও ২০ শতাংশ নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। কন্যাশ্রী ক্লাব, বন্ধু মহলের উদ্যোগে কিছুটা কমলেও এই সংখ্যাটা কম নয়। আরও সচেতনতা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, ‘সারা জেলাতেই কন্যাশ্রী ক্লাব ভালো কাজ করছে। বিশেষ করে কেশপুরের গোলাড় স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাব একাধিক নাবালিকার বিয়ে আটকেছে। ওরা খুব ভালো কাজ করে। জেলা, রাজ্য থেকে এই কাজের জন্য পুরস্কারও পেয়েছে। আমরা ওদের আরও উৎসাহিত করব।’
