অবশেষে বাংলাদেশ থেকে দুর্গাপুরে বাড়িতে ফিরলেন রওশন আনসারি ও তাঁর বোন আয়েশা খাতুন। ঢাকার শাহবাগে বেসরকারি ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া আয়েশা। রওশন ওই কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করে সেখানে ইন্টার্নশিপ করছেন। বুধবার সকালে গেদে সীমান্ত দিয়ে এই দেশে আসার পর ট্রেনে কলকাতায় আসেন দুই ভাইবোন।সেখান থেকে বিকেল ৪টে নাগাদ দুর্গাপুরে আইটিআই আমবাগানে নিজেদের বাড়িতে পৌঁছন রওশন ও আয়েশা। দুই সন্তান বাড়ি ফিরে আসায় স্বস্তিতে বাবা আয়ুব আনসারি ও মা রেহানা খাতুন। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক। একাধিক সরকারি ভবনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীর। চরম পরিস্থিতির মধ্যে কলেজ হস্টেল ছেড়ে সিরাজগঞ্জে এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন আয়েশা।
কলেজ হস্টেলে থেকে গিয়েছিলেন রওশন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না আয়ুব আনসারি। আয়ুব ও তাঁর স্ত্রী রেহেনা ছেলেমেয়েদের নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন। রওশন বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোরে গাড়ি ভাড়া করে ঢাকা থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরে সিরাজগঞ্জে যাই। বুধবার সকালে সেখান থেকে বোনকে নিয়ে দর্শনা-গেদে সীমান্ত হয়ে এসেছি। পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। রাস্তায় সেনা টহল দিচ্ছে। যে কাউকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। প্রয়োজনে আটকেও দিতে পারে। তাই মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা থেকে বেরিয়েছিলাম। আজও খুব ভোরে বেরিয়ে এসেছি। সংরক্ষণ নিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। ইন্টারনেট চালু হয়েছে। কলেজ খুলতে এখনও কিছুদিন সময় লাগবে।’
রওশন জানান, হস্টেলের মেসে খাবার তৈরি হতো। গন্ডগোলের জেরে মেস বন্ধ রাখা হয়। অনেক দূর থেকে খাবার সংগ্রহ করতে হতো। যদিও এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি আয়েশাকে। ঢাকার তুলনায় সিরাজগঞ্জের পরিস্থিতি একটু ভালো ছিল। আয়েশার কথায়, ‘আমি তো নিরাপদে ছিলাম। কিন্তু ঢাকায় দাদা ছিল। তার জন্য চিন্তা হতো। দাদা বা বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলারও উপায় ছিল না। গত কয়েকদিন যে কীভাবে কেটেছে তা একমাত্র আমরাই জানি।’
আয়ুব আনসারি বলেন, ‘ছেলেমেয়ে বাড়িতে ফিরে আসায় চিন্তামুক্ত হলাম। খবরে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেছি তাতে ওদের জন্য দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের বাংলাদেশে যাবে ওরা।’
এদিকে, পূর্ব বর্ধমানের গলসির বাসিন্দা মৌসুমী মণ্ডলও বাংলাদেশ থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে মঙ্গলবার গলসি ফিরেছেন মৌসুমী। খুলনা শহরে একটি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ছেন তিনি।