রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনাও করেছিল শীর্ষ আদালত। তারও আগে পাঞ্জাব সরকারের করা একই ধরনের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল— রাজ্যপাল বিল আটকে রেখে বিধানসভাকে এ ভাবে ভেটো দিতে পারেন না। শীর্ষ আদালতের সেই পর্যবেক্ষণও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের আবেদনে তুলে ধরেছে।
এ দিন শুনানি চলাকালীন বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এবং জয়দীপ গুপ্ত রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জয়দীপ বলেন, ‘রাজ্যের তরফে এই মামলা সম্পর্কে রাজভবনকে জানানোর পরই রাজ্যপালের অফিসের তরফে বলা হয়, কয়েকটি বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য রিজ়ার্ভ রাখা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে আমাদের কিছু বলা হয়নি।’
সিঙ্ঘভি এর আগে তামিলনাড়ু সরকারের হয়েও সেখানকার রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘এটা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তামিলনাড়ুর ক্ষেত্রে মামলা তালিকাভুক্ত হওয়ার পরই প্রথমে দু’টি বিল ছেড়ে দেন রাজ্যপাল। আবার সুপ্রিম কোর্টে মামলার পরবর্তী শুনানির আগে বলা হলো, রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও একটা বিল পাঠানো হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি না— রাজ্যপালকে কাজ করাতে হলে কেন সুপ্রিম কোর্টকে মামলা তালিকাভুক্ত করতে হচ্ছে।’
কেরালা সরকারের হয়ে অনুরূপ একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করছেন আর এক বর্ষীয়ান আইনজীবী কেকে বেণুগোপাল। তাঁর যুক্তি— ‘রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালের বিল পাঠানোর অর্থ রাজ্য সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করা হচ্ছে।’
বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে বিলগুলি আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছে রাজ্য সরকার, তারমধ্যে বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিল। এর পাশাপাশি পুরসভা সংক্রান্ত বিলও পড়ে রয়েছে। এই আটটি বিলের মধ্যে দু’টি বোসের সময়কার, বাকি আটটি তাঁর পূর্বসূরি জগদীপ ধনখড়ের সময় থেকে রাজভবনে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ রাজ্যের।
যদিও ধনখড়ের সময়ে রাজ্যের সঙ্গে রাজভবনের বিস্তর টানাপড়েন চললেও সুপ্রিম কোর্টে যায়নি রাজ্য। এ বার বোসের বিরুদ্ধে আটঘাট বেঁধেই শীর্ষ আদালতে লড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।