Heavy Rain,নাগাড়ে বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গে জলের তলায় রাস্তা-সেতু – south bengal people life in disrupted by continuous heavy rain


এই সময়:শুক্রবার সকালে হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনে হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখায় চন্দননগরের কাছে আপ লাইনের পাশে বড়সড় ধস নামে। খবর পেয়েই ওই রুটে ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। আপ হুল এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। গত কয়েক দিন ধরেই হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এই জমা জলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর হাওড়ার সালকিয়ায় এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়।

সালকিয়ার তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা সমীর পাল বলেন, ‘আমাদের এখানে বৃষ্টি না-হলেও জল জমে থাকে। আশপাশের এলাকার ড্রেনের জল এখান দিয়ে পাস হয়। নিকাশি ব্যবস্থা যথেষ্ট খারাপ।’ সবথেকে খারাপ অবস্থা লিলুয়ার বামুনগাছি এলাকার। সাঁতরাগাছি ও বেলুড়ে রেল স্টেশনের সাবওয়েতেও জল দাঁড়িয়ে রয়েছে।

জলমগ্ন বোলপুর-শান্তিনিকেতনের বিস্তীর্ণ এলাকাও। কঙ্কালীতলা মন্দির চত্বরে জল দাঁড়িয়ে, বন্ধ মন্দিরের গর্ভগৃহ। কোপাই নদীর জল বইছে সেতুর উপর দিয়ে। পুলিশের তরফে সেতুর দু’দিকে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে৷ গোয়ালপাড়ার কাছে সেতুর উপর দিয়েও বইছে কোপাই। ফলে কসবা হয়ে পাড়ুই যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। পাড়ুইয়ের হাঁসরা-মাখরার কাছে কোপাইয়ের স্রোতে ভেসে গিয়েছে একটি চারচাকা গাড়ি৷

শুক্রবার বিকেলে ইলামবাজার থানার মহিষাপুর-বোলপুর রোড দিয়ে একটি মুরগিবোঝাই খাঁচাগাড়ি যাচ্ছিল বোলপুরের দিকে। আগে থেকেই শাল নদীর জল রাস্তার উপর দিয়ে বইছিল। সেখান দিয়ে গাড়িটি যেতে গেলে রাস্তার মাটি বসে যায়। জলের স্রোত বেশি থাকায় মুহূর্তের মধ্যে গাড়িটিও ভেসে যায়। তার আগে অবশ্য ড্রাইভার ও খালাসি গাড়ি থেকে নেমে পালান।

স্থানীয় বাসিন্দা সুবল মণ্ডলের কথায়, ‘আমরা তখন রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। জলের উপর দিয়ে গাড়িটা পার হতে গিয়ে ভেসে গেল। ভাগ্য সহায় ছিল বলে ড্রাইভার ও খালাসি বেঁচেছে।’ পরিস্থিতি খারাপ দুই বর্ধমানেও। দুর্গাপুর পুরসভার অন্তত ১২টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। বাড়ি ভেঙে জখম একজন। দুর্গাপুরের অন্ডাল বিমানবন্দর চত্বরে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।

বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক জলের তলায়। হুগলির বাঁশবেড়িয়া পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড জলমগ্ন। বৈদ্যবাটি স্টেশনের দু’দিকে জমা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। উত্তর চব্বিশ পরগনার পানিহাটি, আগরপাড়া, ব্যারাকপুর সদর এবং বরাহনগর মিউনিসিপ্যালিটির বেশ কিছু এলাকায় এখনও জল দাঁড়িয়ে।

বনগাঁর রেলবাজার, চাঁপাবেড়ে, জয়পুর, দীনবন্ধুনগর, খেদাপাড়া এলাকায় জল সরানোর জন্য ১৬টি পাম্প বসানো হয়েছে। দক্ষিণে বারুইপুর থানার মাদারহাট নতুনপল্লী এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ঝাড়গ্রাম জেলার পাঁচামি থেকে জামবনি যাওয়ার পথে পুতরুঙী খালের কাছে রাস্তা জলে ভেসে যাওয়ায় ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দহিজুড়ির বসন্তপুর থেকে লালগড় যাওয়ার পথে কংসাবতী নদীর উপর কাঠের ব্রিজটি কার্যত জলের তলায়।

ব্রিজের উপর যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মানিকপাড়া থেকে মেদিনীপুর যাওয়ার পথে কংসাবতী নদীর উপর আরও একটি কাঠের সেতু আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। চিলকিগড়ে ডুলুং নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ওই পথ দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরে কংসাবতী, শিলাবতী-সহ বিভিন্ন নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বর্ধমান, কোমর পর্যন্ত জল একাধিক এলাকায়, গৃহহীন অনেকেই

মেদিনীপুর সদর ব্লকের কঙ্কাবতীতে কংসাবতী নদীর উপর থাকা ফেয়ার ওয়েদার বাঁশের সাঁকো ডুবে যাওয়ার সমস্যা বেড়েছে। তবে কলকাতার পরিস্থিতি তুলনায় অনেকটা ভাল। কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিংয়ের দাবি, মহানগরে জল জমার কোনও খবর নেই।

তবে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তাঁরা। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে কন্ট্রোল রুম। যে সব এলাকায় জল জমার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে অতিরিক্ত পাম্প বসানো হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *