রাস্তা যত চওড়া হয়, বিল্ডিংয়ের উচ্চতাও বাড়ে। এর জন্যে ব্রিটিশ আমলেই মূল কলকাতার (১-১০০ নম্বর ওয়ার্ড) রোড ম্যাপ তৈরি হয়েছিল। পুরসভার ওই আমলের চিফ ভ্যালুয়ার অ্যান্ড সার্ভেয়ার স্মার্ট সাহেবের তত্ত্বাবধানে রোড ম্যাপ তৈরি হয়েছিল বলে এর নামই হয়ে গিয়েছে ‘স্মার্ট ম্যাপ’। কোন রাস্তা কতটা চওড়া, এই স্মার্ট ম্যাপ থেকেই বোঝা যায়।
তার উপরে ভিত্তি করেই মূল কলকাতায় বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দেয় পুরসভার চিফ ভ্যালুয়ার অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগ। ঢাকুরিয়ার মতো কিছু এলাকায় আবার মৌজা ম্যাপ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুরসভার সংযোজিত এলাকায় আজ পর্যন্ত রোড ম্যাপ তৈরি হয়নি। মূলত এলবিএস এবং বাড়ির মালিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ এতদিন সংযোজিত এলাকায় বাড়ির নকশা অনুমোদন করত।
কিন্তু দিন কয়েক আগে পুর-কমিশনার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, এখন থেকে গোটা শহরেই বাড়ি তৈরিতে চিফ ভ্যালুয়ার অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগের ছাড়পত্র নিতে হবে। পুরসভার এই সিদ্ধান্তে অশনি সঙ্কেত দেখছেন এলবিএস’রা। এলবিএস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা অনিমেষ গুড়িয়া বলেন, ‘সংযোজিত এলাকায় যেখানে কোনও রোড ম্যাপই তৈরি হয়নি সেখানে সার্ভেয়ার বিভাগ কী ভাবে রাস্তার মাপ ঠিক করে দেবে? প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের নতুন করে ইনস্পেকশন করতে হবে। তাতে অনেকটা সময় লাগবে। মানুষ আরও হয়রানির শিকার হবেন।’
পুরকর্তাদের অবশ্য যুক্তি, বেনিয়ম রুখতেই এই সিদ্ধান্ত। সংযোজিত এলাকায় রাস্তার আয়তন বেশি করে দেখিয়ে অনেকে পুরসভা থেকে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন নিচ্ছেন। তা নিয়ে পরে নানা সমস্যা হচ্ছে। যেখানে দমকলের গাড়ি ঢোকার মতো রাস্তা নেই সেখানেও তিনতলা-চারতলা বাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থার উপরেও চাপ পড়ছে। সে-সব আটকাতেই সংযোজিত এলাকায় বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে চিফ ভ্যালুয়ার অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।