Bjp West Bengal,মিষ্টিমুখ মেটার পরে সক্রিয় পদ্মের দিলীপ অনুগামীরা! সভাপতি পদে কি নয়া সমীকরণ? – speculation about west bengal bjp new state president


মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
গত বুধবার বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের ঘরে দিলীপ ঘোষের মুখে সন্দেশ গুঁজে দিতে দেখা গিয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এরপর বঙ্গ-বিজেপির রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে যেতে বেশি সময় লাগেনি। রাজ্য থেকে ব্লক স্তরে পদ্মের দিলীপপন্থী নেতা-কর্মীদের মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে বাড়তি তৎপরতা।লোকসভা ভোটের প্রচারে দিলীপ-ঘনিষ্ঠ যে বিজেপি নেতারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন, গত তিনদিনে তাঁদের সক্রিয়তা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর। বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঠাঁই পেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক ব্যক্তি দুই পদে থাকতে পারেন না। ফলে সুকান্তকে ছাড়তেই হবে রাজ্য সভাপতির চেয়ার।

বদলে কে নতুন রাজ্য সভাপতি হবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা বিজেপির অন্দরে। একাধিক নাম চর্চায় থাকলেও সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাপ্রবাহ থেকে দলের একাংশ মনে করছেন, দৌড়ে সামনের সারিতে চলে এসেছেন দিলীপ। সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল কলকাতায় একান্তে বৈঠক করেন দিলীপের সঙ্গে।

সূত্রের খবর, পরের দিনই বনসল ‘কেশব ভবন’-এ গিয়ে কথা বলেন বাংলার আরএসএস নেতাদের সঙ্গে। এর কিছুদিন পর শুভেন্দুর উদ্যোগে বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের ঘরে দিলীপের জন্মদিন উদযাপন হয়। এই দুইয়ের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘রাজনীতিতে অকারণে গাছের পাতাও নড়ে না। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী কোনও কারণ ছাড়াই দিলীপ ঘোষকে বিধানসভায় আমন্ত্রণ জানিয়ে সন্দেশ খাওয়ালেন, এটা হতে পারে না। নিশ্চয়ই বিরোধী দলনেতা কোনও বার্তা শীর্ষ মহল থেকে পেয়েছেন।’

দুইয়ে দুইয়ে চার করেছেন দিলীপ অনুগামীরাও। সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলার পার্টি অফিসগুলিতে ফের শুরু হয়েছে দিলীপপন্থীদের আনাগোনা। দিলীপ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘দিলীপ ঘোষ লড়াকু নেতা। তাঁর হাত ধরেই বাংলায় বিজেপির পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়েছে। তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনও দায়িত্ব পেলে তাতে বিজেপিরই মঙ্গল।’

আচমকা দিলীপ-অনুগামীদের সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘যাঁরা গত ক’দিনে সক্রিয় হয়েছেন, তাঁরা বিজেপিপন্থী। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি।’ তবে রাজ্য সভাপতি বদল যে অনিবার্য, তা জানিয়ে সুকান্তর মন্তব্য, ‘নতুন রাজ্য সভাপতির নাম সাতদিনেও ঘোষণা হয়ে যেতে পারে, আবার নভেম্বর-ডিসেম্বরও হয়ে যেতে পারে। সবটাই নির্ভর করছে পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের উপর।’

তবে সুকান্তর উত্তরসূরি হিসেবে দিলীপের পাশাপাশি রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যরও নাম আছে চর্চায়। বঙ্গ-বিজেপির যুযুধান সব গোষ্ঠীর নেতাই শমীককে সম্ভ্রমের চোখে দেখেন। বিজেপির একাংশের যুক্তি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এই মুহূর্তে দলের সব থেকে বড় সমস্যা। সেটা দূর করতে হলে শমীকের মতো কাউকে রাজ্য সভাপতির চেয়ারে বসানো প্রয়োজন।

জন্মদিনে বিধানসভায় দিলীপ, মিষ্টিমুখ শুভেন্দুর, মধুরেণ সমাপয়েৎ মিটলেও চর্চা থামল না

দিলীপ-শমীকের বাইরে বঙ্গ-বিজেপির নতুন সভাপতি হিসেবে আরও কিছু নাম আলোচনায় আছে। যেমন, সুকান্ত মজুমদার ব্যক্তিগতভাবে চাইছেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতোকে তাঁর চেয়ারে বসাতে। সূত্রের খবর, শুভেন্দু চাইছেন, দলের কোনও বিধায়ককে রাজ্য সভাপতি করতে।

তবে শেষ পর্যন্ত দিল্লি থেকে কার নাম বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হিসেবে ঘোষণা হবে, সেটা অবশ্য নির্ভর করছে আরএসএস কার নাম কতটা জোরালো ভাবে সুপারিশ করছে, তার উপর।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *