একদিকে লাগাতার বৃষ্টি অন্য দিকে ডিভিসির ছাড়া জলে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে মুণ্ডেশ্বরী। জলের স্রোতে শনিবার রাতেই মুণ্ডেশ্বরী নদী উপর ভেঙে পড়ে পাঁচটি সাঁকো। হাওড়ার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া চিৎনান গ্রাম পঞ্চায়েত। সমস্যায় পড়েছেন দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দারা। এখন মূল ভুখণ্ডে আসতে তাঁদের ভরসা নৌকা।হাওড়া জেলার একমাত্র দ্বীপাঞ্চলে দুটো পঞ্চায়েত— ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান। সেই দু’টি পঞ্চায়েতই এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমতা ২ ব্লকের কুলিয়াঘাট থেকে ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনানের মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
রবিবারই এলাকা পরিদর্শনে যান আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল, হাওড়ার জেলাশাসক দীপপ্রিয়া পি, উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল ও অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁরা এ দিন একটি বৈঠকও করেন।
দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দাদের কথা ভেবে মুণ্ডেশ্বরীর উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। এই সাঁকো পেরিয়ে অনায়াসে ভাটোরা-ঘোড়াবেড়িয়ার মানুষ হাওড়ায় আসতে পারতেন। শনিবার রাত দশটার সময়ে সেই সাঁকো ভাঙতে শুরু করে। পূর্ত দপ্তরও একটি ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে।
সেই ব্রিজের কাজের জন্য কিছু অস্থায়ী সাঁকো বানানো হয়েছিল। সেই সব সাঁকোও ভেঙে পড়েছে। যেমন কাশমলি গ্রাম পঞ্চায়েতের আজানগাছি থেকে চিৎনানের সংযোগরক্ষাকারী বাঁশের সাঁকোটি ভেঙেছে। তাই বাধ্য হয়ে মুণ্ডেশ্বরী নদীতে খেয়া পারাপার শুরু করতে হয়েছে।
সাঁকো ভেঙে পড়ায় নৌকায় উপচে পড়ছে ভিড়। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। যদিও যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, সাঁকো ভেঙে যাওয়ার ফায়দা নেওয়া হচ্ছে। নৌকা অতিরিক্ত ভাড়া চাইছে। এ দিন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল এলাকায় গেলে তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের লোকজন নিয়ে তিনি একটি বৈঠকও করবেন বলে জানান বিধায়ক।
দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই সাঁকো ভেঙে পড়ে। অথচ কাজের প্রয়োজনে রোজই এখানকার বাসিন্দাদের হাওড়ায় যেতে হয়। তাই সাঁকো ভাঙলে ঝুঁকি নিয়েই পারপার করতে হয়। এলাকা মানুষ তাই দ্রুত সেতুর কাজ শেষের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, তা না হলে প্রতি বর্ষাতেই এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দাদের।