Indian Bangladesh Border,জ্বলছে ওপার, সংকটে এপারে সীমান্তও রুদ্ধ – high alert issued in indian bangladesh border


এই সময়, পেট্রাপোল, ঘোজাডাঙা ও চ্যাংড়াবান্ধা: বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় সোমবার বিকেলে সেনা নামল পেট্রাপোল সীমান্তে। প্রভাব পড়ল দুই দেশের সীমান্ত বাণিজ্য এবং যাত্রীদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রেও। সোমবার সকালের দিকে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক রপ্তানি হলেও দুপুরের পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার।স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সেনা নজরদারি চালালেও পেট্রাপোল সীমান্ত অপারেটের দায়িত্বে বিএসএফের জওয়ানরাই রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বর্ষায় পদ্মার ইলিশ আসার সম্ভবনাও বিশবাঁও জলে। একই ছবি রাজ্যের অন্যান্য সীমান্তগুলিতেও। পেট্রাপোল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ থেকে থেকে ৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক ও পারে যায়। আমদানিও হয় সমসংখ্যক ট্রাক।

রপ্তানির পণ্য বাংলাদেশের বেনাপোলের গোডাউনে আনলোড হয়। কিন্তু অস্থিরতার জেরে সেই পণ্য গোডাউন থেকে নিতে পারছেন না ও পারের ব্যবসায়ীরা। বেনাপোলের গোডাউনগুলি পণ্যে উপচে পড়ছে। স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এ দিন সকাল সাতটা পর্যন্ত কিছু গাড়িতে রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু সাতটার পর থেকে তিন চার ঘণ্টা রপ্তানি বন্ধ ছিল।

একই পরিস্থিতি আমদানির ক্ষেত্রেও। দুপুরের পর থেকে অবশ্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বৈদেশিক বাণিজ্য। শুনশান হয়ে পড়ে পেট্রাপোল বন্দর। রবিবারই পেট্রাপোল হয়ে বেনাপোলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা কাপড়ের ব্যবসায়ী আবু তাহের। সোমবার এ পারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব খারাপ। বাংলাদেশ সরকার কার্যত লকডাউন করে দিয়েছে। বাধ্য হয়েই এ দিন বেনাপোল থেকে ফের ভারতে চলে এসেছি।’

পণ্য ব্যবসায়ী পল্লব মিত্র বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে কী হবে জানি না। এ পারে ৭০০ গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে।’ পেট্রাপোল শুল্ক দপ্তরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংস্থার সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘এ দিন মাত্র ১৫৬টি গাড়ি রপ্তানি হয়েছে। আমরা জ়িরো পয়েন্টে গিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাঁরাও সদুত্তর দিতে পারেননি।’

নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তেও। এ দিনই সুন্দরবনের টি জংশনে ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট (বিওপি) পরিদর্শন করেন। বিএসএফ সূত্রের খবর, টি জংশনে ভাসমান বিওপিতে বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন বিএসএফ আধিকারিকরা। বসিরহাট মহকুমায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আনুমানিক ১৩০ কিলোমিটার সীমান্ত।

যার মধ্যে ৯৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে জল সীমান্ত। এ দিন ঘোজাডাঙা সীমান্তে অন্যান্য দিনের মতো ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। দোকানপাটে লোকজন কম। সংখ্যায় কমলেও দু’‌দেশের মধ্যে বাণিজ্য চলেছে। ফল, পেঁয়াজ, সব্জির মতো পচনশীল সামগ্রীর ট্রাক বাংলাদেশে গিয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী নামানো হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

India Bangladesh Border : বনগাঁ থেকে মালদা, সীমান্তে বাড়ল বিএসএফের নজরদারি, আপাতত বন্ধ পণ্য পরিবহণও

শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়ি সীমান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দা রুমি বলে গেলেন, ‘দয়া করে আমাদের বাংলাদেশের জন্য দোয়া করুন।’ শিলিগুড়িতে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার দেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির খবর পেয়েই দ্রুত দেশে ফিরে যান তাঁর মতো অনেকেই। দুপুরের পরে ফুলবাড়ি সীমান্তের উল্টোদিকে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ে আকাশে ধোঁয়া দেখা যায়।

বিএসএফের আশঙ্কা, সীমান্তের ও পারেই সরকারি দপ্তরে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়েছে। তার পরেই সীমান্তের গেট বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। রবিবার থেকেই ফুলবাড়ি থেকে বাংলাদেশে ট্রাকের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে দুই দেশের বাসিন্দাদের যাতায়াত অব্যাহত ছিল। দুপুরের পরে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। এ দিনই বাংলাদেশে আটকে পড়া প্রায় ১৯০ ট্রাকচালককে দেশে ফেরত আনা হলো কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়ে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *