Buddhadeb Bhattacharjee Memory: ‘কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বাচ্চু’ – kanika banerjee sister son priyam mukherjee shares the memory of former cm buddhadeb bhattacharjee


হেমাভ সেনগুপ্ত, শান্তিনিকেতন
সালটা ২০০১। প্রয়াত কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে কলকাতার গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায় পরিবারের উদ্যোগে ‘মোহর কণিকা’ নামে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। উদ্বোধক তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, ভি বালসারা, মান্না দে এবং কলিম শারাফি। উদ্বোধনের পরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। হঠাৎ নজর গেল একটি ছবির দিকে।শান্তিনিকেতনে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি ‘আনন্দধারা’য় বসে আছেন মোহরদি ও বুদ্ধদেব। ছবির ক্যাপশনে লেখা, ‘শান্তিনিকেতনে একান্ত আলাপচারিতায় কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।’ সেই ক্যাপশন দেখা মাত্রই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, ‘প্রদর্শনীটি কে কিউরেট করছেন?’

পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোনের ছেলে প্রদর্শনীর কিউরেটর প্রিয়ম মুখোপাধ্যায়। তাঁকে উদ্দেশ করে বুদ্ধদেববাবু বলেন, ‘ছবির ক্যাপশনটা ভুল আছে’। চমকে উঠে প্রিয়ম জিজ্ঞেস করেন, ‘কী ভুল হয়েছে?’ বুদ্ধদেববাবু বলেন, ‘ওখানে ক্যাপশন হবে, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বাচ্চু।’

সে ঘটনার স্মৃতিচারণ করে প্রিয়ম ‘এই সময়’কে বলেন, ‘বুদ্ধদেববাবু আমার পিঠ চাপড়ে সে দিন বলেছিলেন, উনি সব সময়ে আমাকে বাচ্চু বলেই ডাকতেন। সেই ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে ওঁকে কত বার দেখেছি। মোহরদি আমাকে খুবই রাগাতেন।’ এর পরেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে মজা করতেন, সে গল্প শোনান মোহরদির ‘বাচ্চু’।

আসলে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে কলকাতার ভট্টাচার্য পরিবারের যোগাযোগ-আত্মীয়তা দীর্ঘ দিনের। তখন বুদ্ধদেববাবু হাফ প্যান্ট পরা শিশু। কলকাতায় গেলে ভট্টাচার্য বাড়িতে উঠতেন কণিকা। ছোট্ট বাচ্চু ঘোরাঘুরি করতো তাঁর আশপাশে। কণিকা তাঁকে হাতের নাগালে পেলেই ঘরে থাকা উঁচু দেরাজের উপরে তুলে দিতেন।

বাচ্চু নামতে না পেরে চিৎকার করলেই হেসে লুটোপুটি খেতেন কণিকা। প্রিয়মের কথায়, ‘প্রদর্শনী কক্ষে দাঁড়িয়ে এই ঘটনাটি বুদ্ধদেববাবু নিজে আমাকে বলেছিলেন।’

‘ভরা থাক স্মৃতিসুধায়’, আজ শেষযাত্রা, দেহদান এনআরএসে
বুদ্ধদেবের জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত। খুব ভালোবাসতেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া টপ্পা অঙ্গের রবীন্দ্রসঙ্গীত। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোন বীথিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শান্তিনিকেতনে যত বার এসেছেন, তত বারই দিদির কাছে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তাঁর গানের চরম ভক্ত ছিলেন। আমি সেই সব ঘটনার সাক্ষী।’

শান্তিনিকেতনে এলেই স্টেশন থেকে সোজা চলে যেতেন ‘আনন্দধারা’ বাড়িতে। সেখানে কণিকার সঙ্গে দেখা করে যেতেন শিল্পী সোমনাথ হোড়ের বাড়ি। নিজের মাস্টারমশাই ভবতোষ দত্তকে প্রণাম করতেও তাঁর বাড়িতে যেতেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

আশ্রমিক স্বপনকুমার ঘোষ ডুব দিলেন স্মৃতিচারণায়, ‘তখন বিশ্বভারতীর উপাচার্য দিলীপ সিংহ। শ্যামলী গৃহের সামনে মোহরদির চারটি ক্যাসেট প্রকাশিত হবে। উদ্বোধন করবেন তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী বুদ্ধদেব। সে দিন মাত্র ৫ ঘণ্টার জন্য শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন। আমাকে ডাকতেন, ম্যান অন দ্য স্পট শান্তিনিকেতন। সে বার ওঁকে আনতে বোলপুর স্টেশনে গিয়েছি। নেমেই বললেন, কণিকাদির বাড়ি যাবেন। সোজা সেখানে গেলেন। খবরাখবর নিলেন। পরে ভবতোষদার বাড়ি হয়ে তার পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *