Buddhadeb Bhattacharya,প্রাণ যেতে বসেছিল, শুধু সাক্ষী রেখেছিলাম বুদ্ধবাবুকে – tmc leader manas bhunia reaction on buddhadeb bhattacharya passed away


মানস ভুঁইয়া
২০০৯-এ মঙ্গলকোটে সিপিএমের হামলায় প্রায় মারা পড়ছিলাম আমরা। সেখান থেকেই আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ফোন করেছিলাম। বলেছিলাম, ‘বুদ্ধবাবু, আমাদের ১৬ জন বিধায়কের প্রাণ যেতে বসেছে। আমরা কোনও ভাবে প্রাণরক্ষা করেছি। আপনাকে জানিয়ে এই ঘটনায় সাক্ষী রাখলাম।’ এই কথা শুনে বুদ্ধদেব বলেছিলেন, ‘সে কী! এ তো অত্যন্ত সিরিয়াস ব্যাপার। আমি দেখছি।’ পরের দিন বিধানসভাতেও ওঁকে মঙ্গলকোটের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করেছিলাম।রাজনীতির জগতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ক্রিটিক্যালি অ্যাটট্রাকটিভ পার্সোন্যালিটি ছিলেন। বিধানসভায় দশকের পর দশক তাঁকে দেখেছি। দিনের পর দিন বিভিন্ন ইস্যুতে ঝগড়া করেছি। হাউসে প্রবল ঝগড়ার পরে অধিবেশন শেষে উনিই আবার কফি খেতে ডাকতেন। আমি বলতাম, ‘এই তো ঝগড়া শেষ করলাম। এখনই এক সঙ্গে কফি খাব!’

এই কথা শুনে হাসতেন। এই ভাবে কত দিন যে বিধানসভার ভিতরে ঝগড়া করে অধিবেশনের শেষে কফি খেয়েছি, তার ইয়াত্তা নেই।১৯৯৬-এ সবংয়ে ব্যালট বক্স ভেঙে আমাকে হারানো হয়। আমি সে কথা এক দিন বুদ্ধদেবকে বলতে উনি বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু এই গেমে নেই। আমার হাতে এটা নেই।’

বাইরে থেকে দেখলে ওঁকে রুক্ষ মনে হতো। কিন্তু অন্তরে উনি অত রুক্ষ ছিলেন না। শিল্পসাহিত্য-সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতেন। পাণ্ডিত্য ছিল। সেই নিয়ে কিছুটা অহঙ্কারও ছিল। এখনও মনে আছে, ২০১১-র নির্বাচনের আগে বিধানসভার শেষ অধিবেশনের বিতর্কে অন্যতম প্রধান বক্তা ছিলাম।

‘ভরা থাক স্মৃতিসুধায়’, আজ শেষযাত্রা, দেহদান এনআরএসে

সে দিনের ভাষণে ওঁকে বলেছিলাম, ‘কমিউনিস্ট পার্টির ভারতীয়করণ না হলে আপনাদের দিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যে দিন আপনাদের দল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে মিছিল করে বেলেঘাটার গান্ধী ভবন পর্যন্ত যাবে, সে দিন ভারতীয়করণ হবে।’ উনি মন দিয়ে সব কথা শুনেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বামেরা বেলেঘাটার গান্ধী ভবন পর্যন্ত মিছিল করেছে।

আমরা ওঁর তীব্র সমালোচনা করলে উনি মজা করে বলতেন, ‘প্রণবদাকে আমরা কিন্তু নিয়ে নিয়েছি!’ আমিও হেসে বলতাম, ‘প্রণবদাকে যখন নিয়েই নিয়েছেন তখন আর কী করব!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *