Buddhadeb Bhattacharya,শোকার্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে ঘরের মেঝেয় বসে পড়লেন সিএম – buddhadeb bhattacharya came barasat in connection murder case of secondary school student


আশিস নন্দী, বারাসত
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তখনও মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে। তবে রাজ্যে পালাবদল আসন্ন। সেই সময়েই উত্তর ২৪ পরগনার সদর শহর বারাসতে ঘটেছিল ভয়ঙ্কর ঘটনাটি। ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। দিদির সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হতে হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ভাইকে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তখন একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রী।ওই কিশোরের হত্যার পর দিনেই নিহতের বারাসতের বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই স্মৃতি ভারাক্রান্ত ওই পরিবার। নিহতের দিদি এবং মা-বাবাকে সমবেদনা জানিয়ে সাত দিনের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। নয় দিনের মধ্যে গ্রেপ্তারও হয়েছিল অভিযুক্তরা।

বারাসতের বাড়িতে মা-বাবা এবং দিদির সঙ্গে এক চিলতে ঘরে থাকত ওই কিশোর। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র রাতে বারাসত স্টেশনের ফ্লাইওভার পেরিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ভাই-বোন। জেলা পরিষদ ক্রস করে প্রশাসনিক ভবনের পাশেই তিন দুষ্কৃতী কটূক্তি করে দিদিকে। দিদিকে বাঁচাতে রুখে দাঁড়ালে দুষ্কৃতীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। ভাইকে বাঁচাতে ওই তরুণী জেলা শাসকের অফিস থেকে পুলিশ সুপারের বাংলোর গেট ধরে সাহায্যের আকুতি জানিয়েও সুরাহা পাননি।

‘টেনসড ছিলাম, হাতটা ঘষা লেগে রক্ত বার হল…’, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে শোকাতুর মমতা

এই ঘটনার একদিন পরেই তাঁদের বাড়িতে ছুটে যান বুদ্ধদেব। সরু গলিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরাট কনভয় ঢোকেনি। পায়ে হেঁটেই নিহতের বাড়িতে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। ওই তরুণীর মাথা নিজের কোলে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, ‘তোমার ভাইকে আমি ফিরিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু অপরাধীদের আমি সাত দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করাব।’ ওই ঘরে বুদ্ধবাবুর ঘণ্টাখানেক থাকার সমৃতি আজও অমলিন সেই তরুণীর স্মৃতিতে।

অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গাড়ি পাঠিয়ে মহাকরণে নিয়ে এসেছিলেন নিহতের দিদি, মা এবং বাবাকে। তাঁর নির্দেশেই নিহতের মা জেলা পরিষদে স্থায়ী চাকরি পেয়েছিলেন। ওই তরুণী বলেন, ‘তখনও ভালো করে জানতাম না উনি মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের ঘরের মেঝেয় বসে নিজের পরিবারের লোকজনদের মতোই আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। ওঁর জন্যই আজ আমরা দু’বেলা খেতে পাই। আমরা কোনও রাজনীতি করি না। কিন্তু ওঁর মতো একজন মানুষের চলে যাওয়ার খবরে চোখে জল আসছে বারবার।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *