RG Kar Medical College : কেউ ভয় না পেলে কড়া আইনে লাভ কী? – asha devi nirbhaya mother says what on rg kar medical college doctor death case


আশা দেবী (নির্ভয়ার মা)
২০১২-এর ১৬ ডিসেম্বর। শীতের রাতে দিল্লির রাস্তায় পড়েছিল আমার মেয়েটা… ক্ষত-বিক্ষত, রক্তে মাখামাখি। মা হয়ে সন্তানের এই অবস্থা দেখা যে কতটা কষ্টের, সেটা আমার থেকে বেশি কেউ জানে না। কলকাতার হাসপাতালে লেডি ডাক্তারের উপর অত্যাচার, খুনের খবর দেখার পর থেকে আমার মেয়েটার কথা খুব মনে পড়ছে।সরকার নারীর ক্ষমতায়ন, উন্নয়নের কথা এত ফলাও করে বলছে, কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের সুরক্ষা কোথায়? কলকাতার মেয়েটা তো ডাক্তার, সে যদি হাসপাতালে-ই সুরক্ষিত না থাকে, তা হলে কীসের ক্ষমতায়ন?

আমার মেয়ের ওই ঘটনার পর কড়া আইন এনেছে সরকার, কিন্তু লোকে যদি অপরাধ করতে ভয়ই না পায়, তা হলে আইন এনে লাভ কী? এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটলে কাদা ছোড়াছুড়িতে আসল ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। নির্ভয়ার পরও তো এ ধরনের কতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর মামলা এখনও বিভিন্ন কোর্টে চলছে, অপরাধীরা এখনও সাজা পায়নি। বিচার‍ের এই হাল দেখেই লোকে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছে না।

মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়ছে, তারা এগোচ্ছে— কথাগুলো শুনতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু এগুলো সবই গালভরা কথা। কলকাতার এই মেয়েটার কথাই ধরুন। এত পড়াশোনা করে, প্রতিকূলতা পেরিয়ে, ডাক্তার হওয়া তো মুখের কথা নয়। সমাজে ডাক্তারদের তো সম্মানই আলাদা। ভাবুন, মেয়েটা কত রোগীর চিকিৎসা করেছে, সুস্থ করে তুলেছে। তাকেই হাসপাতালের মধ্যে এ ভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হলো!

অভিযুক্ত ধরা পড়েছে, এটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু সমস্যাটা হলো, এই সব মামলা কোর্টে ঝুলেই থাকে। ১০-১৫ সালেও বিচার শেষ হয় না। এখন অনেকেই বলবে, ‘এদের ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত, কড়া শাস্তি হওয়া উচিত’, কিন্তু কবে হবে? শুধু কড়া আইন আনলে হবে না, এই ধরনের কেসে শুনানি শেষ হওয়ার, চার্জশিট ফাইল করার সময় বেঁধে দিতে হবে, না হলে ন্যায়বিচার হবে না।

আরজি করকাণ্ডের পর সুরক্ষায় বাড়তি জোর, পদক্ষেপের আশ্বাস স্বাস্থ্য সচিবের
এ ধরনের ঘটনার পর পর অনেক দলের লোকই আসেন, সমবেদনা জানান। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে কেউ পাশে থাকে না। এ ধরনের জঘন্য অপরাধের পর প্রভাবিত করার চেষ্টাও চলে। সেই ফায়দা নিলে আমিও আজ এমপি, এমএলএ হয়ে বসে থাকতে পারতাম, কিন্তু আমার মেয়েটাকে কি ফিরত? আমি শুধু আমার মেয়েটার খুনের ইনসাফ চেয়েছিলাম। আমি কারও পক্ষে কথা বলিনি, কিন্তু সকলের হয়ে কথা বলেছিলাম। তাই অবশেষে আমার মেয়েটা ন্যায়বিচার পেয়েছে।

তবে যার যায়, সন্তানহারানোর কষ্ট সে-ই বোঝে! মেয়েকে এত বড় করা, ডাক্তারি পড়ানো—মুখের কথা নয়। কষ্ট করে বড় করা সন্তানকে এ ভাবে হারালে বাবা-মায়ের কী অবস্থা হয়, আমি জানি। কলকাতার নিহত তরুণীর পরিবারকে বলব, আপনাদের পাশে আছি। যেখানেই থাকি, আপনাদের জন্য ইনসাফের দাবিতে গলা মেলাব। আর সরকারের কাছে অনুরোধ, অপরাধীর দ্রুত সাজা নিশ্চিত করুন। এ ধরনের অপরাধে ফাঁসির সাজাই হওয়া উচিত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *