RG Kar Medical College: বার বার অপরাধ করেও কী ভাবে পার পেল সঞ্জয়? – rg kar medical college main accused sanjay roy has committed multiple offences in the past claimed kolkata police


তাপস প্রামাণিক ও জয় সাহা
মহিলা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এটাই তার প্রথম অপরাধ নয়। তবে আগের সব অপরাধ করার পরেও সে দিব্যি পার পেয়ে গিয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ও এখনও পর্যন্ত একমাত্র ধৃত, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় অতীতেও একাধিক বার এই ধরনের অপরাধ ঘটিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রেই এখন জানা যাচ্ছে।সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক সরকারি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা এবং মহিলা পুলিশকর্মীদের ফোনে অশ্লীল মেসেজ পাঠানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কেউ তার কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেননি। এখানে পুলিশের অন্দরেই উঠে আসছে, প্রভাবশালী-তত্ত্বের কথা। প্রশ্ন উঠছে, মাথার উপর এক বা একাধিক প্রভাবশালীর হাত থাকার কারণেই কি সঞ্জয় দিব্যি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গিয়েছেন?

পুলিশ সূত্রের খবর, কীর্তিমান সঞ্জয়ের তিন বোন, তাঁদের দু’জন পুলিশেই চাকরি করেন। ওই দু’জনের এক জন এএসআই। ওই দু’বোনের সম্ভবত কোনও এক জনের সুপারিশেই ২০১৮ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিতে ঢোকে সঞ্জয়। পুলিশ সূত্রের খবর, আর এক বোনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মাস কয়েক আগে।

আরজি করের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মদ ও গাঁজার নেশায় চুর সঞ্জয় মাঝেমধ্যেই মহিলা চিকিৎসক ও নার্সদের উত্ত্যক্ত করতো। এমনকী এ-ও অভিযোগ যে, মাস তিনেক আগে হাসপাতালের স্লিপ রুমে ঢুকে নেশার ঘোরে এক মহিলা জুনিয়র ডাক্তারের উপর সঞ্জয় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এক মহিলা চিকিৎসকের আক্ষেপ, ‘সেই সময়ে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার রাতের ভয়ঙ্কর ঘটনা হয়তো ঘটত না।’ মোবাইল ফোনে মহিলা পুলিশকর্মীদের অশ্লীল মেসেজ পাঠানো ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার ব্যাপারেও সঞ্জয় ছিল বেপরোয়া। কিন্তু কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট নয়।

‘আরজি কর-এর মতো অবস্থা হবে’, মহিলা চিকিৎসককে ‘হুমকি’ সিভিক ভলান্টিয়ারের
এসএসকেএম হাসপাতালের পাশে ৫৫/বি শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটের এক চিলতে বাড়িতে মা-কে নিয়ে থাকত সঞ্জয়। তাদের আদি বাড়ি বিহারে। সঞ্জয়ের বাবা ছিলেন ট্যাক্সি ড্রাইভার। বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়। সঞ্জয়ের পড়াশোনা উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যন্ত। প্রায় সাত মাস আগে তার স্ত্রী শান্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তার আগে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ওই মহিলা ট্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

তবে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, শান্তির আগেও চার-চারটে বিয়ে ছিল সঞ্জয়ের। সম্ভবত সঞ্জয়ের অত্যাচারেই একটা বিয়েও টেকেনি বলে পড়শিদের বক্তব্য। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, সঞ্জয় সবাইকে বলে বেড়াত, ওর সঙ্গে পুলিশের বড় বড় অফিসারদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

সঞ্জয়ের মা মালতী রায় বেশ কিছু দিন যাবৎ শয্যাশায়ী। ছেলের গ্রেপ্তারির খবর শুনে তিনি ভেঙে পড়েছেন। তবে ওই মহিলার দাবি, ‘আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার ছেলে এ রকম কাজ করতে পারে না।’ তাঁর বক্তব্য, ‘আসলে ওর বাবা মারা গিয়েছে। কয়েক মাস আগে বৌটাও মারা গিয়েছে। ভালোবাসার কেউ নেই!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *