জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ আন্দোলনে আরজি করের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে রেফার আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বারাসত হাসপাতাল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ১১ বছরের সাপে কাটা রোগীকে ভর্তি করা হয়। রোগীর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। কিন্তু তাকে রেফার না করে আইসিইউতে রেখেই চিকিৎসা চলছে।
অপর্ণা বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ছেলেকে সাপে কামড়েছে। খুব খারাপ অবস্থা। ডাক্তারবাবুরা রেফার না করে এখানেই রেখেছেন। তাতে ভালোই হয়েছে।’ সোমবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ বিষ খাওয়া এক রোগীকে অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় আনা হয়েছিল বারাসত হাসপতালে। তাঁকেও রেফার না করে আইসিইউ সাপোর্টে রেখে চিকিৎসা চলছে।
বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালের পরিস্থিতির কারণে গত শনিবার থেকে রেফার বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের যা পরিকাঠামো তাতেই আশঙ্কাজনক রোগীদের রেফার না করে চিকিৎসা চলছে। এ জন্য অতিরিক্ত ১২টি আইসিইউ বেড বাড়ানো হয়েছে।’
এক আশঙ্কাজনক রোগীর আত্মীয় নুরজাহান বিবি বলেন, ‘অবস্থা খুব খারাপ ছিল। রেফার করলে হয়তো পথেই মারা যেত। এখন এই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে।’ অন্য দিকে, আরজি করে মহিলা চিকিত্সককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে সোমবার মৌন মিছিল করেন বারাসত হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাঁদের মৌন মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক এবং নার্সরাও।
হস্টেল থেকে বেরিয়ে হাসপাতাল চত্বর ঘুরে মৌন মিছিল শেষ হয় হাসপাতালের মূল গেটে। শনিবার আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বারাসত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ডেপুটেশনও দিয়েছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, পড়ুয়ারা মিছিল করলেও ইন্ডোর এবং আউটডোর পরিষেবা সচল রয়েছে।
এ দিন বারাসত শহরেও একটি মৌন মিছিল বের হয়। বারাসতের কালীকৃষ্ণ গার্লস স্কুলের সামনে থেকে মহিলারা কালো পোশাক এবং মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল করেন। হাতে ছিল মোমবাতি। যশোহর রোড ধরে মিছিল গিয়ে শেষ হয় আদালত সংলগ্ন এলাকায়। মিছিলে অংশ নেওয়া প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা গীতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব, তাঁরাই এই নারকীয় ঘটনার সঙ্গে যুক্ত! এই লজ্জা রাখব কোথায়?’
সুলেখা মজুমদার নামে আর একজন বলেন, ‘মহিলারা কি এখনও পর্দার আড়ালেই থাকবে? অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।’ এদিন আইএমএ বারাসত শাখার পক্ষেও বারাসত শহরে প্রতিবাদ মিছিল হয়। সংগঠনের প্রায় দুশো জন চিকিৎসক এবং নার্স এদিনের প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন।