আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজ্যকে এ ব্যাপারে গাইডলাইন ফ্রেম করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলায় আবেদনকারীর আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, ‘গত বছর ডিসেম্বরে আমার মক্কেলের স্ত্রী মারা যান। দুই মেয়ের একজন উচ্চ মাধ্যমিক দেবে, অন্যজন নবম শ্রেণির পড়ুয়া। তাদের দেখভাল বাবা একাই করেন। সে কারণে এই স্কুল-শিক্ষক বাবারও অধিকার রয়েছে মায়েদের মতো সিসিএল পাওয়ার।’
এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইনও পেশ করেন তিনি, যেখানে সিঙ্গল ফাদারদের ক্ষেত্রে মায়েদের সমান হারে সিসিএল দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলি ভাস্কর বৈশ্য বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার করেছে বলেই রাজ্যকে তা করতে হবে, এই যুক্তি মানে না সরকার।’ তবে তাঁর যুক্তিতে আমল না-দিয়ে আদালত জানিয়ে দেয়, মায়েদের মতো বাবাদেরও কর্মজীবনে মোট দু’বছরের সিসিএল দিতে হবে।
আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে পুরুষ অধিকারের পক্ষে আন্দোলন করা সমাজকর্মী নন্দিনী ভট্টাচার্য বলেন, ‘খুবই আনন্দের খবর। আমি পুরুষ বা নারীর কোনও সংঘাত দেখছি না। আজকের দিনে সন্তান পালনের ক্ষেত্রে বাবার ভূমিকা অনেক বদলে গিয়েছে। সেখানে মায়ের মতোই বাবাও খুব আনন্দের সঙ্গে মাঝরাতে বাচ্চার ন্যাপি বদলান। ফলে এই ছুটি পেলে সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রে বাবা এবং মা দু’জনে মিলে কাজ করতে পারবেন।’
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পুরুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করা দীপিকা ভরদ্বাজের বক্তব্য, ‘আমরা মুখে লিঙ্গ-সাম্যের কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে বহু ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। আমরা এখন এমন এক সমাজ চাইছি, যেখানে সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রে বাবা এবং মা— দু’জনেরই সমান ভূমিকা থাকবে। সেখানে বাবাদের জন্য যদি কলকাতা হাইকোর্ট এমন রায় দিয়ে থাকে, তাকে স্বাগত জানানো দরকার। শুধু বাবাদের জন্য নয়, লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধেও একটি উদাহরণ হিসেবে এই নির্দেশ থেকে যাবে।’