জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং বলেন, ‘ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ-সহ আরও বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যাতে অভিযুক্তরা সহজে জামিন না পেয়ে যায়, তার জন্য বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত মামলার তদন্ত শেষ করে তথ্যপ্রমাণ সমেত চার্জশিট জমা করব আদালতে। যাতে অভিযুক্তদের হেফাজতে রেখেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যায়, তার জন্যও প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ অগস্ট বুধবার সন্ধেয় বর্ধমান-নবদ্বীপ ও বর্ধমান-কালনা সড়কের মাঝে একটি লিঙ্ক রোডে নাদরা ব্রিজের ওপরে প্রেমিকের সঙ্গে গল্প করছিলেন তরুণী। অভিযোগ, সেই সময়ে ওই এলাকারই তিন যুবক এসে তাঁদের কাছে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। তরুণীর সঙ্গী, মির্জাপুরের বাসিন্দা ওই যুবক জানতে চান, কেন তাঁদের টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের কাছে অত টাকা নেই বলেও জানান তিনি।
তারপরেও অপরিচিত তিন যুবকের হাত থেকে নিস্তার পেতে কোনও রকমে ওই তিনজনের মধ্যে একজনের মোবাইলে ইউপিআই-এর মাধ্যমে হাজার খানেক টাকা পাঠান। কিন্তু তারপরেও তরুণী ও ওই যুবক চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুকক্তরা তাঁদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ব্রিজ থেকে তাঁদের টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরে একটি গাছে যুবককে বেঁধে রেখে তাঁর সামনেই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার পর ওই যুবক ও নির্যাতিতা তরুণী এতটাই আতঙ্কিত ছিলেন যে, তাঁরা প্রথমে পুলিশকে বিষয়টি জানানওনি। পরে তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তিনি বাড়ির লোকজনকে গোটা বিষয়টি খুলে বলেন। পরিবারের ঘনিষ্ঠ দু’-একজনের পরামর্শে রবিবার শক্তিগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। শক্তিগড় থানার পুলিশই তরুণী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বর্ধমান মহিলা থানায় নিয়ে যায়। সেখানে লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ রাতেই অভিযানে নেমে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ধৃতদের টিআই প্যারেডের দাবি জানানো হবে আদালতে। তার আগে পুলিশ কিছু তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে নিতে চাইছে। টিআই প্যারেডের পরেই ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেবে পুলিশ।’ ইতিমধ্যে ওই তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়েছে। পাশাপাশি বিচারকের কাছে তাঁর গোপন জবানবন্দিও রেকর্ড করানো হয়েছে বলে জানান জেলার এসপি আমনদীপ।