Iit Kharagpur,নিরক্ষীয় ওজ়োন স্তর অক্ষতই, আশ্বাস আইআইটি খড়্গপুরের – iit kharagpur published research paper on health of ozone layer


ঘটনাটা ঘটেছিল সূর্যগ্রহণের দিন। দক্ষিণ গোলার্ধের কোনও এক জায়গায় ওজ়োন স্তরের ছিদ্র অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। সেই পথেই ঢুকে এসেছিল সূর্যের বিশেষ এক ধরনের রশ্মি। ওই রশ্মির প্রভাবেই বিস্তীর্ণ এলাকার বাতাসের তাপমাত্রা দ্রুত নেমে গিয়েছিল হিমাঙ্কের অনেকটা নীচে। ওই বাতাস যে দিকে বয়ে যায়, তার গতিপথের সব কিছুই জমে বরফ হতে থাকে।এমনই প্লট নিয়ে তৈরি হয়েছিল হলিউডের সায়েন্স ফিকশন মুভি ‘আর্কটিক ব্লাস্ট’। ওজ়োন স্তরের ছিদ্র এবং তার প্রভাবে পৃথিবীতে কী ভয়ানক বিপর্যয় যে ঘটতে পারে, তা নিয়ে বেশ কিছু ছবি তৈরি হয়েছে। সেগুলোর দৌলতে সাধারণ মানুষের একাংশ বুঝেছেন, ওজ়োন স্তর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও সেটা পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়।

ওজ়োন স্তরের স্বাস্থ্য নিয়ে অতি সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন আইআইটি খড়্গপুরের সেন্টার ফর ওশান, রিভার, অ্যাটমোস্ফিয়ার, অ্যান্ড ল্যান্ড সায়েন্স (কোরাল) বিভাগের দুই অধ্যাপক-গবেষক। সেই গবেষণার ফল শুধু ভারত নয়, বিষুবরেখার এ পাশে-ও পাশে অর্থাৎ নিরক্ষীয় অঞ্চলে যে দেশগুলো রয়েছে, তাদের সবাইকেই অনেকটা আশ্বস্ত করার মতো।

দুই গবেষক জানাচ্ছেন, নিরক্ষীয় অঞ্চলের ওজ়োন স্তরের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। অতীতে বিভিন্ন দেশের অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্স বিভাগের একাধিক গবেষক নিরক্ষীয় অঞ্চলের ওপরের ওজ়োন স্তর নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। অতীতের সেই সব আশঙ্কাই এবার অমূলক বলে প্রমাণ করল দুই ভারতীয়ের গবেষণা। নিরক্ষীয় অঞ্চলেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ বসবাস করেন।

সুতরাং, সব দিক বিবেচনা করেই আইআইটি খড়্গপুরের এই গবেষণাকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
নিজেদের গবেষণা সম্পর্কে ‘কোরাল’-এর গবেষক জয়নারায়ণ কুট্টিপ্পুরাথ ‘এই সময়’-কে বলেন, ‘১৯৮০ থেকে ২০২২, ৪২ বছর ধরে নিরক্ষীয় অঞ্চলের আকাশে ওজ়োন স্তর সম্পর্কে যত তথ্য পাওয়া গিয়েছে, আমরা সেই সব ডেটা অ্যানালিসিস করেছি। তার পরেই আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যার ভিত্তিতে বলা যায় এই এলাকার ওজ়োন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

মানভূমে ফ্লোরাইড সংক্রমণ, বাড়ছে দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়

দুই গবেষক জানিয়েছেন, অতীতে মনে করা হতো, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বাতাসের স্তর সম্পর্কে পাওয়া ডেটা থেকেই ওজ়োন স্তরের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু পরে গবেষকরা দেখেছেন, কোনও অঞ্চলের ওজ়োন স্তরের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে গেলে ভূপৃষ্ঠের ১৫-২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতার ডেটা সম্পর্কে জানতেই হবে। অতীতের গবেষণায় এই ডেটা তেমন গুরুত্ব পেত না।

অধ্যাপক জয়নারায়ণ বলছেন, ‘ওজ়োন স্তরের স্বাস্থ্য মাপার জন্য আমরা ডবসন ইউনিট নামে একটি একক ব্যবহার করি। কোনও জায়গার ওজ়োন স্তর ২২০ ডবসন ইউনিট থাকলে সেটা বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। আমরা দেখেছি, নিরক্ষীয় অঞ্চলে যে কোনও জায়গাতেই ওজ়োন স্তর ২২০ ডবসন ইউনিটের চেয়ে অনেক বেশি অবস্থায় আছে। সুতরাং চিন্তার কোনও কারণই নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *