Rg Kar Hospital,আরজি কর ছেড়ে হাবরা হাসপাতালে, সঙ্কটাপন্ন শিশুকে অন্যত্র ভর্তির কথা বলেন ডাক্তারবাবু – parents came to habra hospital with a 21 day old critically ill child from rg kar hospital


এই সময়, হাবরা: গ্রাম-মফস্‌সল থেকে ক্রিটিক্যাল রোগীদের কলকাতার হাসপাতালে রেফার করাই দস্তুর। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যে উলটপুরাণ! আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি ২১ দিনের এক সঙ্কটাপন্ন শিশুকে নিয়ে বাবা চলে এলেন হাবরা হাসপাতালে। বুধবার আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের পরেই ডাক্তারবাবুরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, এমন সঙ্কটাপন্ন বাচ্চার দায়িত্ব তাঁরা নিতে পারবেন না।যেখানে তাঁদেরই নিরাপত্তা নেই, সেখানে ওইটুকু বাচ্চার দায়িত্ব তাঁরা নেবেন কী ভাবে? ডাক্তারবাবুদের মুখে এ কথা শোনার পরেই স্ত্রী-সন্তানকে হাবরা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন সাগর বিশ্বাস। যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কোনও মহকুমা হাসপাতালে রোগী রেফার করতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও রেফার না করলেও পরিষেবা দিতে যে অপারগ সেটা ডাক্তারবাবুরা বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই শিশুর বাবা।

আরজি কর হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন হাবরার পিয়ালি বিশ্বাস। জন্মের পর থেকেই বাচ্চার ওজন কম ছিল। সঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্ট। ব্রেস্ট ফিডিংয়েও সমস্যা হচ্ছিল সদ্যোজাতর। তাই হাসপাতাল থেকে ছুটি হয়নি। বাবা সাগর বিশ্বাস কাজকর্ম ভুলে আরজি কর হাসপাতাল চত্বরেই থাকতেন। রাতেও সেখানেই থাকতেন। এ ভাবেই চলছিল।

কিন্তু আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিত্সককে ধর্ষণ ও খুনের পরেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরু হয়। তারমধ্যেও বাচ্চাকে নিয়ে আরজি করেই ছিলেন পিয়ালি। কিন্তু বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পর আতঙ্ক চেপে বসে সকলের মনে।

সাগর জানালেন, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চললেও সিনিয়র ডাক্তাররা ওয়ার্ডে রোগী দেখতেন। পরিষেবা পেতে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব, ভাঙচুরের পর আতঙ্কে ভুগছেন চিকিৎসক-রোগী সকলেই। নিজের চোখে সেদিনের সেই তাণ্ডব দেখেছেন সাগর। তখন হাসপাতালে ভর্তি তাঁর ২১ দিনের বাচ্চা ও স্ত্রী।

সেই রাত যে কী ভাবে কেটেছে আর মনে রাখতে চান না সাগর। অন্য দিকে, পিয়ালিও ওয়ার্ডে শুয়ে ইট-পাটকেল পড়ার, ভাঙচুরের আওয়াজ পেয়েছিলেন। ভয় পাচ্ছিলেন দুষ্কৃতীরা না তাঁদের ওয়ার্ডে চলে আসে। পিয়ালি জানিয়েছেন, ওয়ার্ডের সব রোগীই প্রবল আতঙ্কে সময়টা কাটিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার সাগরকে ডেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন ডাক্তারবাবু। বাচ্চার চিকিৎসার কথা ভেবে সাগর অনেক অনুনয়-বিনয় করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি কিছুই। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বলে জানিয়েছেন সাগর। তিনি বলেন, ‘বাচ্চার কিছু হয়ে গেলে তার দায় ডাক্তারবাবুরা নেবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।’

রেফার বন্ধ করল বারাসত হাসপাতাল

অসহায় সাগর-পিয়ালি অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন হাবরা হাসপতালে। হাবরা হাসপাতালের বেডে বসে পিয়ালি বললেন, ‘বুধবার সারারাত দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। কখন কী হয় এই আতঙ্কে কেটেছে।’ কিন্তু সন্তানের মুখ চেয়ে তা-ও পিয়ালি চেয়েছিলেন আরজি করেই থেকে যেতে।

সাগর বিশ্বাস বলেন, ‘বাচ্চাকে নল দিয়ে খাওয়াতে হচ্ছিল। অক্সিজেন চলছিল। তারপরেও বৃহস্পতিবার রেফার করে দিল। ডাক্তারবাবুদের অনেক অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা বলছেন, ডাক্তাররাই সুরক্ষিত নয়। তাঁরা চিকিৎসা করবেন কী ভাবে। বাচ্চার কিছু হয়ে গেলে কোনও দায় নেবেন বা বলেও জানিয়েছেন। তাই হাবরা হাসপাতালেই নিয়ে এলাম।’ হাবরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই সঙ্কটাপন্ন ওই শিশুর চিকিৎসায় যাতে ত্রুটি না থাকে সেটা তাঁরা দেখবেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *