Bhangar News,রাতে ৩০০ মিটার রাস্তাই ভয় ধরায় লেডি ডাক্তার-নার্সদের – bhangar woman doctor and nurse are in fear due to no light and cctv camera on road


প্রশান্ত ঘোষ, ভাঙড়
বাস থেকে নেমে হাসপাতালে যাওয়ার প্রায় তিনশো মিটার রাস্তায় নেই কোনও আলো। নেই সিসিটিভি ক্যামেরাও। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে যেতে এমনিতেই মানুষের হাল খারাপ হয়ে যায়। আর সন্ধে নামার পর অন্ধকারে নাইট ডিইটিতে আসা লেডি ডাক্তার ও নার্সদের কাছে ওই রাস্তা বিভীষিকার।অভিযোগ, নির্জন রাস্তায় অন্ধকারে অনেক সময়েই ইভটিজ়ারদের উৎপাত সইতে হয়। এমনকী কখনও গায়ে হাত দিয়ে চলে যায় মোটরবাইক আরোহীরা। অশালীন মন্তব্য তো রয়েইছে। আরজি কর-কাণ্ডের পরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে ভাঙড়ের জিরানগাছা গ্রামীণ হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ও নার্সদের। কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ।

আরজি করের ঘটনার পরে কি হাসপাতালে যাওয়ার পথের নিরাপত্তা বাড়বে—এখন প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারাই। ২০১৯ সালে হায়দরাবাদের তরুণী পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। সেই বছরেরই ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের এক সন্ধ্যায় জিরানগাছা গ্রামীণ হাসপাতালের তরুণী স্বাস্থ্যকর্মীর শ্লীলতাহানি করে পালায় এক যুবক।

অভিযোগ, রাতে আমবাগান পেরিয়ে ডিউটিতে যাওয়ার সময়ে বছর আঠাশের ওই তরুণীকে হাত ধরে টানাটানি করে এক অপরিচিত যুবক। নার্সের শরীরে বিভিন্ন আপত্তিকর জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন ওই তরুণী। পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।

আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে এসে বিষয়টি জানাতেই কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ভাঙড় ২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক আমিনা মরিয়ম। যদিও পুলিশ সেই ঘটনার তদন্তে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ভাঙড় ২ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন লক্ষেরও বেশি বাসিন্দার বড় ভরসা জিরানগাছা গ্রামীণ হাসপাতাল। বর্তমানে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১৪ জন ফিমেল নার্স ও দু’জন মহিলা চিকিৎসক রয়েছেন।

এ ছাড়া কমিউনিটি হেলথ অফিসার বা সিএইচ, এএনএম, আশাকর্মী, এমও, টেকনিশিয়ান, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মিলিয়ে ৯৫ শতাংশই মহিলা। বাস থেকে নেমে সকলকে আমবাগানের মধ্য দিয়ে হাসপাতালে আসতে হয়। ওই পথেই আসেন মহিলা রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরা। অভিযোগ, নির্জন আমবাগানের অন্ধকার রাস্তা দিয়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে প্রায়ই ইভটিজ়িংয়ের শিকার হতে হয়।

মাঝেমধ্যে শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে। তাই নাইট ডিউটি পড়লেই হাসপাতালে যেতে ভয়ে ভয়ে থাকেন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, ‘বেশির ভাগ নার্স বাইরে থেকে এখানে ডিউটি করতে আসেন। হাতিশালা সিক্স লেন পর্যন্ত নিউটাউনে স্ট্রিট লাইট, সিসিটিভি ক্যামেরা সব আছে। কিন্তু হাতিশালা বাজার থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত কিছুই নেই। রাস্তাও ভাঙাচোরা। সন্ধের পর অপরিচিত যুবকদের ভিড় বাড়ে। অশ্লীল কথাবার্তা, গা ছুঁয়ে বাইক বা সাইকেল নিয়ে যাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। কিছুদিন আগেও দু’জন নার্সের সঙ্গে এমনটা হয়েছে।’

Kolkata Police : ২১০টির মধ্যে ৪৮টি সিসিটিভি বিকল আরজি করে, বিশেষ পদক্ষেপ লালবাজারের

ভাঙড় ২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরণ্ময় বসু বলেন, ‘হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও, রাস্তায় কোনও ক্যামেরা নেই।’ এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়েই সন্ধের পর বাস স্টপেজ থেকে হাসপাতালে যাওয়া-আসা করেন মহিলা চিকিৎসক ও নার্সরা। বাকি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই সুবিধাটুকুও পান না।

এলাকাবাসীর ক্ষোভ সাত মাস আগে ভাঙড় কলকাতা পুলিশের অন্তর্ভুক্ত হলেও নিউটাউন লাগোয়া হাতিশালা, জিরানগাছা আজও অন্ধকারে ডুবে আছে। এখন এটি ভাঙড় ডিভিশনের পোলেরহাট থানার অধীনে। থানা জানিয়েছে, ক্যামেরা, আলো লাগানোর চিন্তাভাবনা চলছে। ভাঙড় ২ ব্লকের বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে দেখব, ওখানে কী কী সুরক্ষাবিধির ব্যবস্থা করা যায়।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *