তৃণমূল ভবনে কুণাল এ দিন অভিযোগ করেন, ‘আমাদের কাছে সূত্র মারফৎ খবর আছে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে রাজ্যপালের উপরে চাপ রয়েছে। রাজ্যপাল যাতে লিখিত কোনও বক্তব্য রাষ্ট্রপতিকে জানান, তার জন্য চাপ তৈরি করা হচ্ছে। তাঁকে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে। এটা সত্যি না মিথ্যা, রাজ্যপাল তা বলুন।’
স্পষ্ট করে না-বলা হলেও কুণালের বিবৃতিতে রাজভবন থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশের ইঙ্গিত রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত। যদিও গেরুয়া শিবির তৃণমূলের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘বিজেপি চাইলে অনেক আগেই এই সরকার ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু করতে পারত। কিন্তু বিজেপি এই রাজনীতি করে না। রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু করার রাজনীতি কংগ্রেস করেছে। সেই কংগ্রেস থেকেই তৃণমূলের জন্ম হয়েছে। জনরোষ এই সরকারকে উপড়ে ফেলে দেবে কি না, সেটা সময় বলে দেবে।’
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, বাংলায় এই মুহূর্তে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের কোনও সুযোগ নেই। সংবিধান বিশেষজ্ঞ পিডিটি আচার্যের ব্যাখ্যা, ‘বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা-সহ অনেক রাজ্যেই নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তার জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়নি। একান্তই যদি এমন কোনও পদক্ষেপ হয়, তা রাজনৈতিক হঠকারিতা হবে।’
সুপারিশের বিষয়ে কোনও মন্তব্য না-করলেও আরজি করের ঘটনা নিয়ে এ দিন রাজ্য সরকারে সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল বোস। রাজভবনে সোমবার তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে মহিলারা সুরক্ষিত নন। এর দায় কার? নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের প্রধান কাজ। সরকার এই কাজে ব্যর্থ হয়েছে।’ আরজি করের ঘটনায় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের উপরে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলেও বোসের পর্যবেক্ষণ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে ইউএসএ, ইউকে-সহ বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রবাসীদের ফোন পেয়েছেনও বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। পাল্টা তাঁকে কড়া জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। কুণালের বক্তব্য, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে সমালোচনা করার আগে রাজভবনে যে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে, যেখানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, উনি তার (তদন্তের) জন্য পুলিশের মুখোমুখি হোন। উনি সাংবিধানিক সুরক্ষার আড়ালে না থেকে রাজভবনের দরজা ন্যায়বিচারের জন্য খুলে দিন। তারপর বড় বড় কথা বলবেন।’