কয়েক দিন আগে উদয়ন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, কেউ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুললে, তাঁর আঙুল ভেঙে দিতে হবে। বিতর্ক হয় তা নিয়েও। রবিবার দিনহাটার সভায় বলেন, ‘চুল্লুর ঠেক ভাঙার জন্য মহিলাদের ঝাঁটা হাতে আন্দোলন করতে দেখেছি। কিন্তু মদের ঠেক ভাঙার জন্য কোনও দিন জিনস-প্যান্ট পরা কিংবা বব-কাট চুলওয়ালা মহিলা দেখিনি।’
তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘কারণ ওটা তো আন্দোলন নয়! আমরা সেই আন্দোলন করব যে আন্দোলন টিভিতে দেখাবে। ইংরেজি খবরের কাগজে খবর হবে।’ মহিলাদের কী করা উচিত, তার ফতোয়াও দিয়েছেন উদয়ন। নেতার কথায়, ‘আগে নিজের ঘর সামলান। যে সমস্ত জিনিস মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সেই লটারি বা মদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন গড়ে তুলুন।’
উদয়নের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘উদয়ন গুহ একের পর এক এই ধরনের মন্তব্য করেই চলেছেন। এই মন্তব্যে দলের কোনও অনুমোদন নেই। এই সময়ে এমন মন্তব্য না করাই উচিত। এই ইস্যুতে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলবেন।’ উদয়নের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এই মন্তব্য দল অনুমোদন করে না। এই রকমের মন্তব্য করা ঠিক নয়। নানা ঘটনায় উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, কিন্তু আমাদের নেতাদের সংযত থাকতে হবে।’
যদিও অনুশোচনার কোনও সুর শোনা যায়নি তাঁর কণ্ঠে। সোমবার তাঁকে ধরা হলে যুক্তি দেন, ‘রাম-বাম মিলে এ সব করছে। তাই তো বলেছি।’ উদয়ন-বিতর্কে তৃণমূলকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির। উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা বলেন, ‘উদয়ন গুহ সব সময়ে মহিলাদের টার্গেট করে নোংরা ভাষায় মন্তব্য করেন। কখনও বাড়ির পুরুষদের লেলিয়ে দেন যাতে মহিলাদের উপরে অত্যাচার হয়। শুধু তাই নয়, মহিলারা কী খাবেন, কী পরবেন তা নিয়ে অশ্লীল কথা বলেন৷’
উদয়নের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বাম মহিলা নেতৃত্বও। সিপিএমের মহিলা নেত্রী কণীনিকা বোস ঘোষ বলেন, ‘মহিলাদের পোশাক নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের এই নীতি-পুলিশির সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ভাবনার কোনও পার্থক্য নেই। তবে এই সব কথা বলে ক্ষোভের রোষানল দমন করা যাবে না।’ উদয়নের মন্তব্য তীব্র বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতিও।