Rg Kar Hospital,’রান্নাবান্না পরে হবে, সুপ্রিম কোর্টে লাইভ স্ট্রিমিং চলছে’ – rg kar hospital incident many people follow tv or mobile for screen supreme court verdict on thursday


রূপক মজুমদার, বর্ধমান
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ। রাজ্য-দেশ-বিদেশে হাজারো মিছিলে উঠেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’-এর স্লোগান। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই জাস্টিস কি আজ মিলবে? উত্তর পেতে বৃহস্পতিবার টিভি বা মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখেছিলেন অনেকেই।প্রথম দেখায় অন্য কারও মনে হতেই পারে যে কোনও হাইভোল্টেজ ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচ চলছে। সামনে যেতেই ভুল ভাঙে। কারণ স্ক্রিনে তখন চলছে সুপ্রিম কোর্টের লাইভ স্ট্রিমিং। সরকারি দপ্তর থেকে বাড়ির রান্নাঘর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সব্জি বাজার— লক্ষ্মীবারের শহর বর্ধমানের সর্বত্র দেখা গেল এমনই ছবি।

তেঁতুলতলা বাজারে তখন ক্রেতাদের ভিড়। সে দিকে মন ছিল না ব্যবসায়ী অনাদি সাহার। কারণ, তাঁর চোখ তখন আলুর বস্তায় ঠেস দেওয়া মোবাইলের স্ক্রিনে। কান সুপ্রিম কোর্টের ভিতরে চলা আইনি লড়াইয়ের ভাঁজে ভাঁজে। সে সময়ে রাধানগর পাড়া থেকে আলু নিতে আসা সুশান্ত দাস দর জানতে চাইলেন।

মুখ না ঘুরিয়েই অনাদির উত্তর, ‘বাছাই ছাড়া ৩০ টাকা। বাছাই করে নিলে ৩৩ টাকা।’ এ বার ব্যাগটা হাতে গুটিয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখলেন সুশান্তও। আলু বাছাই করতে করতে সুশান্ত বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে। একজনের বিয়ে দিয়েছি। একজন দিল্লিতে পড়ে। তাই দুশ্চিন্তা বেশি।’

কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে তিনি বললেন, ‘আমার স্ত্রী বাতের ব্যথায় বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারেন না। কিন্তু ১৪ তারিখ রাতে সেও জোর করে বেরিয়ে কার্জন গেটে এসেছিল। আসলে ওই মেয়েটি আমাদের সবার। এ দিনও বাড়িতে টিভি-তে সুপ্রিম কোর্টের শুনানি দেখছিলাম। আদালতই আমাদের শেষ ভরসা।’

বিসি রোড এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ শম্পা দাস বলেন, ‘ঘরের কাজের মাঝেই আদালত কী রায় দেয় সেটা জানার জন্য টিভি দেখছিলাম। না হয় একটা পদ রাঁধতে পারব না, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় জানাটা বেশি দরকার ছিল।’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, জেলাশাসকের অফিস-ভবনের বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার দপ্তর, পূর্ত ভবনের অফিস— সর্বত্রই কাজের মাঝে অনেকের নজর ছিল সুপ্রিম-রায়ে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আপত্তি, দলিত-আদিবাসীদের ডাকে ভারত বনধ

পূর্ত ভবনের কর্মী মিঠুন ভট্টাচার্য বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল জিতবে বলে যে ভাবে আমরা অপেক্ষা করি, তেমনই এ দিন সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়েছিলাম। আদালতের এমন রায় চাই যাতে আমাদের বোনের আত্মা শান্তি পাবে।’ ২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আগের দিনের মতো এ দিনও আদালতের নির্দেশের দিকে চোখ রেখেছিলাম। একজন পিতা হিসেবে, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমিও চাই এই ঘটনায় দোষীর বা দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।’

এ দিন স্থানীয় বিধায়কের অফিসের কাছে অনেকেই মোবাইলে দেখছিলেন সুপ্রিম কোর্টের লাইভ স্ট্রিমিং। মিহির ঘোষ নামে এক তৃণমূল কর্মী বললেন, ‘ভোট কাউন্টিংয়ের দিন আমরা যেমন টিভির দিকে চোখ রাখি, অনেকটা তেমনই হলো আজ।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *