Junior Doctors Strike,নবান্ন অভিযান থেকে দূরে জুনিয়র ডাক্তাররা, কর্মবিরতি অব্যাহত – junior doctors say they not support nabanna avijan campaign


এই সময়: ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিনভর অশান্তির সাক্ষী থাকল কলকাতার একাংশ ও হাওড়ার রাজপথ। আরজি করের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে সংগঠিত হওয়া সেই নবান্ন অভিযানের সঙ্গে তাঁদের যে দূর দূর পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক নেই, তাঁদের কর্মসূচি যে সম্পূর্ণ আলাদা, এ দিন সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।এ দিন তাঁরা আরও জানালেন, তাঁদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি, আরজি করের ঘটনার সময়ে সেখানকার অধ্যক্ষ থাকা, এখন প্রাক্তন সন্দীপ ঘোষের সাসপেনশন এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে আজ, বুধবার শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত গণ মিছিলের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।

আরজি করের মর্মান্তিক ঘটনার অকুস্থল, চারতলার সেমিনার হলের যে ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় সোমবার ভাইরাল হয়েছে, তা নিয়ে মঙ্গলবার গুচ্ছ প্রশ্ন ওই স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরা। ওই ফুটেজে (যার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) দেখা গিয়েছিল, তরুণী চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের পরে অকুস্থল বা ক্রাইম সিন-এ অনেকের ভিড়, যার মধ্যে ছিলেন বহিরাগতরাও।

এই ব্যাপারে হাসপাতালেই নিজেদের ঘরে এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠক করে আরজি কর এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। মূলত ২০০৯ ও ২০১১ ব্যাচের ওই প্রাক্তনীরা ওই প্রেস মিটের আয়োজন করলেও তাতে ছিলেন এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও। তাঁদের প্রথম প্রশ্ন ছিল, এই ফুটেজ নিয়ে কলকাতা পুলিশের তরফে ডিসি নর্থ-এর বদলে কেন সাফাই দিলেন ডিসি সেন্ট্রাল?

পুলিশের দাবি, ৫১ ফুট লম্বা সেমিনার রুমের মধ্যে মূল অকুস্থল, ৪০ ফুট ঘেরা ছিল এবং ভিড় জমেছিল বাকি ১১ ফুট অংশে। প্রাক্তনীদের প্রশ্ন, ওই ১১ ফুটেই কোনও প্রমাণ (ফুটপ্রিন্ট) যে লুকিয়ে ছিল না, সেই ব্যাপারে পুলিশ কী ভাবে নিশ্চিত হলো? পুলিশের দাবি ছিল, ভিড়ের মধ্যে নিহত চিকিৎসকের মা-বাবাও ছিলেন, যে দাবিকে পরে মিথ্যা বলে জানান মৃতার মা-বাবা।

পুলিশের ওই দাবিরও সমালোচনা করেছেন প্রাক্তনীরা। তবে তাঁদের মূল প্রশ্ন, আইনজীবী শান্তনু দে এক মুহুরিকে নিয়ে কিংবা এক স্নাতকোত্তর পড়ুয়াকে নিয়ে ফরেন্সিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দেবাশিস সোম এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটর প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তি ওই ‘সুরক্ষিত’ এলাকায় কী করছিলেন তদন্তে পুলিশ নামার আগে?

হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ওই আইনজীবীর সঙ্গে আরজি করের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি মাঝেমধ্যে হাসপাতালে আসতেন। আর প্রসূন ছিলেন সন্দীপের ছায়াসঙ্গী। আদতে তিনি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মী। সেখানেই ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে প্রসূন কাজ করতেন যখন সন্দীপ সেখানকার উপাধ্যক্ষ, তখন।

সূত্রের খবর, সেই সময় থেকেই তিনি সন্দীপের বিশেষ আস্থাভাজন এবং সন্দীপের অনেক ব্যক্তিগত বিষয়ের খোঁজখবর রাখেন। অভিযোগ, সেই প্রসূন এতটাই বিশ্বস্ত সন্দীপের যে, ২০২১-এর মার্চে আরজি করে সন্দীপ ঘোষ যখন অধ্যক্ষ হয়ে যোগ দেন, তখন ন্যাশনালের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর প্রসূনকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসেন কোনও সরকারি আদেশনামা ছাড়াই!

মঙ্গলবার আবার সেই প্রসূন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ঝামেলা গড়ায় তাঁর পুরোনো কর্মস্থল ন্যাশনালেও। অভিযোগ, সেখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা প্রসূনের অ্যাটেনড্যান্স রেজিস্টার দেখতে চাইলে ন্যাশনালের কর্তারা তা দেখাতে রাজি হননি। তার পরেই ক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তাররা ন্যাশনালের উপাধ্যক্ষের ঘরে সাময়িক তালা ঝুলিয়ে দেয়।

RG Kar Protest: কাজে ফেরার বার্তা আইএমএ আর স্বাস্থ্য সচিবের, তবু আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা

আরজি করের প্রাক্তনীরা এ দিন আরও অনেক প্রশ্ন তুলেছেন ক্রাইম সিনের ভাইরাল হওয়া ফুটেজ নিয়ে। তাঁদের বিস্ময় ও প্রশ্ন, কলকাতা পুলিশের কর্মী ও অফিসারদের উপস্থিতিতে ‘সিল’ করা অকুস্থলে এমন ভিড় জমল কী করে! তাঁদের এই প্রশ্ন তোলার কারণ হলো, তাঁদের আশঙ্কা, খুন-ধর্ষণের বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ এতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

তাঁদের এই আশঙ্কায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালাও একপ্রকার সিলমোহর দিয়েছিলেন গত সপ্তাহে শুনানি চলাকালীন।কর্মবিরতিতে থাকা আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা এ দিনের নবান্ন অভিযানে অংশ না-নিলেও ওই কর্মসূচিতে পুলিশি সক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন।

একটি বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে তাঁরা বলেন, ‘রাজনৈতিক হোক বা অরাজনৈতিক, ন্যায় বিচারের দাবিতে সরব হওয়া যে কোনও আন্দোলনকারীর উপর প্রশাসনিক ও পুলিশি বর্বরতা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপমান। মঙ্গলবারের ঘটনা তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। আজকের এই পুলিশি তৎপরতা যদি ১৪ তারিখ রাতে আরজি কর চত্বরে দেখা যেত, তবে হয়তো হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ এমন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *