Rg Kar Incident,ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দ্রুত বিচারে ফাঁসির দাবি: সন্দিহান আইনজীবীরাই – rg kar incident lawyers are skeptical of the demand for speedy death sentence


এই সময়: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঝাঁকুনি দিয়েছে গোটা সমাজকে। ফুঁসে উঠে গোটা বাংলায় প্রায় সবার মুখে একটাই দাবি— ‘বিচার চাই এবং এবং দ্রুত বিচার চাই।’মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার মেয়ো রোডের সভামঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন, এ রাজ্যে ধর্ষণের মামলার ১০ দিনে বিচার এবং সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে ফাঁসি সংক্রান্ত আইন আনতে বিধানসভায় তিনি বিল পাশ করবেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ধর্ষণের মামলায় ৫০ দিনে বিচার শেষ এবং ফাঁসির সাজা নিয়ে আইন আনতে কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে আইনজ্ঞদের অনেকে বাস্তবে এর প্রয়োগ নিয়ে দ্বিধায়। কেউ কেউ আবার দ্রুত বিচারের নামে সময় বাঁধার টার্গেটে অশনি সঙ্কেত দেখছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭২ ধারায় (খাদ্যে ভেজাল মেশানো) এক সময়ে দোষ প্রমাণিত হলে এ রাজ্যে ৬ মাস জেলের সাজা ছিল। কিন্তু সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ওই অপরাধে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়।

উত্তরপ্রদেশে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৩৮ ধারার (আগাম জামিন) ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। পরে সেখানে সেই ধারা চালু হয়। এই দু’টি উদাহরণ দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যেহেতু আইন-শৃঙ্খলা কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ তালিকাভুক্ত, তাই এ রাজ্যের সরকার ধর্ষণের ক্ষেত্রে এ রাজ্যে সর্ব্বোচ্চ সাজা হিসেবে সুপারিশ করতেই পারে। যদিও শেষ পর্যন্ত তা সংসদ হয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষ।’

হাইকোর্টেরই তরুণ আইনজীবী সৌম্যজিৎ দাস মহাপাত্রের বক্তব্য, ‘বাস্তবে কিন্তু কিছু প্রশ্ন আসবে। প্রথমত, দেশের নতুন আইনে (বিএনএস) ধর্ষিতার বয়স ১২ বছরের নীচে হলে, আর ১৮ বছরের কমবয়সি গণধর্ষিতা হলে ফাঁসির বিধান রয়েছে। ফলে, যে কোনও বয়সের নারীই ধর্ষিতা হলে সব ক্ষেত্রেই অভিযুক্তর সাজা ফাঁসি দেওয়ার বিধান কি যুক্তিতে টিঁকবে?’

নৃশংস অপরাধের তদন্ত সময়ে বাঁধতে এসওপি চায় আদালত

সৌম্যজিৎ বলছেন, ‘এক সময়ে আইপিসি-তে ৩০৩ ধারা ছিল। কিন্তু সেটা (মিঠু সিং ভার্সেস পাজ্ঞাব, ১৯৮৩) অসাংবিধানিক বলে বাতিল হয়। কারণ, কোনও অপরাধের শাস্তি একমাত্র ফাঁসি— সেটা হতে পারে না।’ কলকাতা হাইকোর্টের আর এক আইনজীবী অরিন্দম দাসের ব্যাখ্যা, ‘অপরাধের গভীরতার সঙ্গে শাস্তির মাত্রা যদি সমানুপাতিক না-হয়, তা হলে তা শাস্তির তত্ত্বের বিরোধী। যেমন ধর্ষণ ও খুন হলে যে শাস্তি হবে, শুধু ধর্ষণের ক্ষেত্রেও এক সাজা হতে পারে না।’

গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ একটি মামলায় ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে দ্রুত সাজার ব্যবস্থা করতে রাজ্যকে এসওপি এবং টাইম ফ্রেম তৈরি করতে বলেছে। আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, ‘সময় বেঁধে বিচার যদি বাধ্যতামূলক হয়, তা হলেও তার ফল উল্টো হতে পারে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *