Rg Kar Incident,আরজি কর-প্রতিবাদ কোন পথে চলবে, ধন্দে বিজেপি শিবির – bjp west bengal wondering which way on rg kar incident protest


মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে কোন পথে আন্দোলন চলবে, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে নতুন টানাপড়েন। শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠরা চাইছেন, বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে। যেমন ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ব্যানারে সম্প্রতি নবান্ন অভিযান হয়েছিল।তবে সূত্রের খবর, আন্দোলনের এই কৌশলের সঙ্গে সহমত নন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা। তাঁরা পদ্ম-ঝান্ডা হাতেই রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চাইছেন। আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। নাগরিক সমাজের এই আন্দোলনের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলিও নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে ঝাঁপিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে বিজেপি আরজি কর নিয়ে লাগাতার ধর্না চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মতলায় তাদের ধর্না চার দিনে পড়ল। এর আগে শ্যামবাজারে টানা পাঁচ দিন ধর্নায় বসেছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় অবস্থান বিক্ষোভ এবং পথ অবরোধ কর্মসূচি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির।

এর পর আরজি কর নিয়ে প্রতিটি জেলায় ধর্নায় বসারও ভাবনা-চিন্তা রয়েছে সুকান্তদের। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘আমরা মহামিছিলের ডাকও দিতে পারি। সে দিন গোটা কলকাতা অচল হয়ে যাবে। তবে সেটা বিজেপির ব্যানারেই হবে। আমাদের হাতে পদ্ম-ঝান্ডাই থাকবে।’

তবে আন্দোলনের এই পথে হাঁটার পক্ষপাতী নয় গেরুয়া শিবিরের একাংশ। বিশেষত, শুভেন্দুপন্থীরা মনে করছেন, সময়টা সত্যাগ্রহের নয়, বরং জঙ্গি আন্দোলনের। যে হেতু সাধারণ মানুষের একাংশ নিজে থেকেই পথে নেমেছেন, তাই বিজেপির ব্যানারে নয়, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারেই লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া উচিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। সূত্রের খবর, ব্যানারে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ লেখা থাকলেও আন্দোলনের ‘অনুপ্রেরণা’য় ছিলেন খোদ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যে কারণে, শনিবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর নেতা সায়ন লাহিড়ি পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রথম ধন্যবাদ জানিয়েছেন শুভেন্দুকেই।

বিজেপির অনেকেই মনে করছেন, ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে শুকনো মুখে বসে থাকার চেয়ে অরাজনৈতিক ব্যানারে একটা নবান্ন অভিযানের প্রভাব অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে শুভেন্দুর বক্তব্যও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ক’দিন আগেই তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘একই দিনে নবান্ন, লালবাজার এবং কালীঘাট অভিযান হবে। কবে এবং কারা করবে, সেটা পরে জানিয়ে দেব।’

গেরুয়া উত্তরীয়, ‘ডায়রেক্ট’ স্লোগান! মিছিলে এরা কারা

অর্থাৎ, বিজেপির ব্যানারে এই ত্রিফলা কর্মসূচির পরিকল্পনা যে তিনি করেননি, তা এক রকম স্পষ্ট। রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির মনে করছে, আরজি কর নিয়ে অরাজনৈতিক আন্দোলন যেমন চলছে, চলুক। পাশাপাশি বিজেপির ঝান্ডা নিয়ে আন্দোলন, সত্যাগ্রহও চলুক।

বঙ্গ বিজেপিতে সুকান্ত ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘রাজনীতির লোকরা তো রাজনীতিই করবেন। তাঁরা অরাজনৈতিক হয়ে হাতে মোমবাতি ধরলে উল্টো ফল হবে। কোনটা রাজনৈতিক মিছিল, আর কোনটা অরাজনৈতিক—এই বিভ্রান্তি থেকে অনেকেই আন্দোলনবিমুখ হয়ে উঠতে পারেন। তাতে আখেরে লাভ হবে তৃণমূলেরই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *