এ দিন বিজেপির বর্ধমান ও বর্ধমান পূর্ব সাংগঠনিক জেলার তরফে বর্ধমানে জেলাশাসকের দপ্তর অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। দুই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা ও গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিল করে এসে কার্জন গেট চত্বরে জমায়েত হন বিজেপি কর্মীরা। সেখান থেকে জেলাশাসকের দপ্তরের দিকে যাওয়ার সময়ে পুলিশি ব্যারিকেডে বাধা পড়ে।
বিজেপি কর্মীরা প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েন। কিন্তু তার পরের ব্যারিকেড ভাঙতে পারেননি তাঁরা। তার পর বিজেপি-র প্রতিনিধি দল জেলাশাসকের কাছে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। কাটোয়া থেকে আসা এক বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘দুই সাংগঠনিক জেলায় যত জন মণ্ডল সভাপতি রয়েছেন তাঁরা এলেও এর থেকে বোধহয় বেশি ভিড় হতো। এত বছর ধরে দলটা করছি। এমন ইস্যুতেও লোক নেই দেখে অবাক লাগছে। নেতারা সংগঠনটা শেষ করে ফেলেছে।’
এ দিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দিনের কর্মসূচি নিয়ে আদি বিজেপি কর্মী কেশব কোঙার কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘৩ ঘণ্টার রোড শো ৪০ মিনিটেই শেষ?’ যেখানে বিজেপি যুবমোর্চার রাজ্য নেতা শুভম নিয়োগী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘ভোম্বলবাবু (দলের এক নেতাকে কটাক্ষ করে) আজকে হাতে গোনা ৬০ লোক নিয়ে গিয়েছিলেন।’
সুব্রত বিশ্বাস নামে আর একজন লিখেছেন, ‘সব জায়গায় সংগঠনের একই অবস্থা। দু’নম্বরি লোক ঢুকে গিয়েছে দলের মধ্যে।’ এ প্রসঙ্গে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় অনেক বাধাবিঘ্নের মধ্যে পড়েও মানুষ আমাদের কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন। আরজি করের ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের বিচার চাই।’
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের কার্যালয় অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। ভাঙা হয় আসানসোলের সেন র্যালে রোডের এইচএলজি হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন পুলিশের প্রথম ব্যারিকেড। যদিও জেলাশাসক কার্যালয় যাওয়ার রাস্তায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সামনে লাগানো দ্বিতীয় ব্যারিকেডে আটকে যান বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
উত্তেজিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা সেই ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা ভাঙা যায়নি। শেষে রাস্তায় ধর্নায় বসে পড়েন নেতাকর্মীরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, দেবতনু ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, জেলা সম্পাদক অভিজিৎ রায়।
ঘোষণা মতো এ দিন বিজেপির জেলাশাসক অফিস ঘেরাও অভিযান বাঁকুড়াতেও হয়। শহরের লালবাজার ও স্টেশন মোড় দু’জায়গা থেকে দু’টি মিছিল বের হয় গেরুয়া শিবিরের। জেলা প্রশাসনিক ভবনের বাইরেই রাস্তায় ব্যারিকেড করে সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। ছিলেন বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল, দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠিক জেলা সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা।
অন্য দিকে, পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের দপ্তরে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ করল বিজেপি। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর দাব, ‘পুলিশের লাঠিচার্জে দলের এক কর্মীর চোখের গোড়ায় গুরুতর আঘাত লেগেছে । পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আহত বিজেপি কর্মীকে। জেলা পুলিশ সূত্রে লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করা হয়।