শাসকদলের নেতা-জনপ্রতিনিধিদের একাংশের অভিযোগ, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় চার্জশিট পেশের ক্ষেত্রে দেরি করে সিবিআই আসলে বিজেপিকে আন্দোলন দীর্ঘায়িত করার সুবিধে পাইয়ে দিচ্ছে।
আদালত ওই মূল মামলার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সিবিআই-কে দেয়। তার আগে, ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা পুলিশ অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করেছিল। সিবিআই তদন্তভার নেওয়া ইস্তক সঞ্জয়, সন্দীপ, নির্যাতিতা ও নিহত তরুণী চিকিৎসকের চার সহকর্মী-সহ সাত জনের পলিগ্রাফ টেস্ট করেছে।
অনেককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং হাসপাতাল ও বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু খুন ও ধর্ষণের মামলায় ঘটনায় সিবিআই কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর, তারা আদালতে প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছে যে, সঞ্জয় একাই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সাকেত গোখলে সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘সন্দীপকে সিবিআই যে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে, সেই মামলা দায়ের করেছিল কলকাতা পুলিশ। যা কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই-কে হস্তান্তর করে।’ সিবিআই সেই মামলার তদন্ত শুরু করে গত ২৪ অগস্ট। সাকেতের বক্তব্য, ‘সিবিআই গত ২০ দিনে সন্দীপের বিরুদ্ধে দু্র্নীতির মামলাতেই ফোকাস করেছিল।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘সঞ্জয় যেহেতু ইতিমধ্যেই ধৃত, তা হলে সিবিআই কেন ধর্ষণ-খুনের মামলায় চার্জশিট পেশ করছে না? প্রয়োজনে তারা পরে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করতেই পারে।’
সাকেতের মতে, ‘সিবিআই জানে, ওই ঘটনায় এক জনই অভিযুক্ত, এবং সে ইতিমধ্যেই ধৃত। এখন সিবিআই চার্জশিট পেশ করলে বিজেপির হাতে আন্দোলন বা প্রতিবাদের কোনও বাহানা থাকবে না। সেই জন্যই সিবিআই-কে বিজেপি চার্জশিট পেশ করতে দিচ্ছে না। কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘সিবিআইয়ের কাছে অনুরোধ, আসল ঘটনাটা অর্থাৎ খুন-ধর্ষণ, ওই তরুণীর উপর অত্যাচারের তদন্ত কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেটা জানান। একমাত্র গ্রেপ্তারি তো কলকাতা পুলিশ করেছে। কিন্তু ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ছেলেটি একা ছিল, নাকি কোনও চক্র ছিল সে আপডেটটা তো দিতে হবে।’
বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকার জন্য তৃণমূল এ সব বলছে। এটা তো শুধু খুন-ধর্ষণের মামলা নয়। দুর্নীতি চাপতে প্রশাসনের মদতে ঘটা ঘটনা।’
তবে সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদেরও। তাঁরা চান, সিবিআই ধর্ষণ ও খুনের তদন্তের আপডেট দিক। সিবিআইয়ের কর্তারা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট তাদের কাছেই জমা দিতে হবে। ফলে, বিচারাধীন ওই বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।