শহর বা শহরতলির পুজোতে আরজি করের প্রভাব কী হবে তা সময়ই বলবে। কিন্তু দশভূজার আশ্রয়ে থাকা সেই মেয়েটির জন্য জাস্টিস চেয়ে প্রবাসের পুজোর আয়োজকরা একজোট হচ্ছেন। ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, কানাডার মতো একাধিক দেশের প্রবাসী বাঙালিরা পুজোর উৎসবেও প্রতিবাদের আবহ জিইয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের এ নিয়ে কোনও আপত্তির কথা এখনও শোনা যায়নি। এই সেতু বন্ধনের কাজ শুরু করেছে ‘সেতু’ নামে প্রবাসী বাঙালি ও ভারতীয়দের একটি সংগঠন।
কোভিডের সময়ে প্রবাসী বাঙালিরা মিলে এই ‘সেতু’ তৈরি করেন। মূলত দুঃস্থ মানুষের সেবার উদ্দেশেই তৈরি হয় সেটি। কোভিডের সঙ্কট কাটার পরে দুর্গাপুজোর মধ্যে সমন্বয় করা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ট্রান্স জেন্ডারদের জন্য সহায়তা, প্রান্তিক পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দেওয়ার কাজ করতেন সেতুর সদস্যরা। এই সেতুই এ বার প্রতিবাদের সেতুবন্ধনে নেমেছে।
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাকাণ্ডে দেশে ও বিদেশে থাকা বাঙালিরা হতবাক। ১৪ অগস্টের ‘টেক ব্যাক দ্য নাইট’ মার্চের পর থেকে সেতুর উদ্যোগে ৩০০-র বেশি অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে একাধিক ভার্চুয়াল গ্লোবাল মিটিং হয়েছে। প্রতিটি মিটিংয়ে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং এই নির্মম অপরাধের বিরুদ্ধে এবং কলকাতার তথাকথিত ‘তদন্তের’ নামে প্রহসনের বিরুদ্ধে অ-দলীয় আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন।’
এই আবহেই এ বার বিভিন্ন দেশের বাঙালি পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন তাঁরা। প্রবাসের প্রায় ১২০টি পুজো এখনও পর্যন্ত সেতুর ডাকে সাড়া দিয়েছে। আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা তাঁদের।
কী ভাবে প্রবাসের পুজোতে প্রতিবাদ হবে? সেতু আবেদন রেখেছে, পুজোর আনন্দের মধ্যে আরজি করের ঘটনা ভুলতে দেবেন না কেউ। প্রতিটি পুজোয় থাকুক ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ লেখা ফ্লেক্স। সঙ্গে থাকুক সই সংগ্রহের ব্যবস্থা। পুজোর সময়ে কলকাতা ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু সেলেব্রিটি অনুষ্ঠান করতে বিদেশে যান।
এই প্রতিবাদে তাঁদেরও সামিল করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কতগুলি নির্দিষ্ট দাবিও সামনে রাখা হয়েছে। যেমন, ঘটনার দায়িত্ব নেওয়া, স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা, যৌন সচেতনতা, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীদের নিরাপত্তা এবং সবার জন্য কর্মস্থল ও সর্বত্র সুরক্ষার ব্যবস্থা করা।