Kolkata Police,’আচরণ’ ঠিক নয়! ডিউটি থেকে বাদ ১৯ সিভিক – lalbazar suspended 19 civic volunteers from duty after rg kar incident


আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে মূল অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। ঘটনায় নাম আসার পরপরই তাকে ডিউটি থেকে সরিয়ে (ডিমোবিলাইজ়) দেয় লালবাজার। শুধু তা-ই নয়, ৯ অগস্ট ঘটনার আগে ডিউটিতে থাকাকালীন সে আর এক সিভিক ভলান্টিয়ার সৌরভ ভট্টাচার্যকে নিয়ে যায় মদের আসরে, যৌনপল্লিতেও। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন মামলায় এখনও সরাসরি তার যোগ না-মিললেও তাকেও ডিউটি থেকে অপসারণ করেছে কলকাতা পুলিশ।এই ঘটনার পর থেকে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে ডিউটিরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি, ডিউটিতে থাকাকালীন কোনও মিস-কন্ডাক্ট ছিল কি না— এমন বিভিন্ন তথ্য খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করেছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সব খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখে, আরজি করের ঘটনার পর থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত আরও ১৯ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডিউটি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন থানা, ট্র্যাফিক গার্ড, ডিভিশন থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে সাম্প্রতিক অতীতে এই সব সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে ডিউটিরত অবস্থায় মদ্যপান, মিস-কন্ডাক্ট, কর্তব্যে গাফিলতির একাধিক তথ্য মিলেছে। তারপরেই দ্রুত এঁদের ডিমোবিলাইজ়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, বাকি সিভিক ভলান্টিয়ারদের যাবতীয় ফ্যাক্টশিট বা ঠিকুজিও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথাও কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মিস-কন্ডাক্টের তথ্যপ্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে।

সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের জন্য যাতে সামগ্রিক ভাবে পুলিশের মুখ না-পোড়ে, তা নিশ্চিত করতেই প্রত্যেকের ফ্যাক্টশিট পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি লালবাজারের। ধর্ষণ-খুনের আগেও সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের নাম করে দাদাগিরি, মহিলাদের সঙ্গে অভব্যতার মতো অভিযোগ যে উঠেছিল, তা আরজি করের ঘটনার পরে প্রকাশ্যে এসেছে।

সিভিক ভলান্টিয়ারদের শৃঙ্খলা শেখাতে ৪৫ দিনের প্রশিক্ষণ
এ সবের পরেও তাকে কী ভাবে পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটিতে রাখা হয়েছিল, তার পিছনে কোনও পুলিশ আধিকারিকেরই মদত আছে কি না- এ প্রশ্নও উঠেছে। সূত্রের দাবি, সঞ্জয়ের ঘটনাটি সামনে আসার পরে আগামী দিনে সিভিক নিয়োগের আগে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গাইডলাইনও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আগামী বছর থেকে সিভিকদের দেড় মাস প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু নিয়োগের আগেই আরও একটা ছাঁকনি রাখতে চাইছে কলকাতা পুলিশ।

কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানা, ট্র্যাফিক গার্ড, ডিভিশন ও অন্যান্য ইউনিট মিলিয়ে সাড়ে সাত হাজারের মতো সিভিক ভলান্টিয়ার ডিউটি করছেন। তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে অতীতে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তোলাবাজি, ডাকাতি, লুটপাট থেকে শুরু করে নারী নির্যাতনের মতো বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগও রয়েছে এই তালিকায়। কয়েক বছর আগে শ্যামবাজার মোড়ে এক ব্যক্তিকে শিক্ষা দিতে এক সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁকে মাটিতে ফেলে বুকের উপরে বুট-সুদ্ধ পা তুলে দিয়েছিলেন — সে ছবি ভাইরাল হয় নেট-দুনিয়ায়।

শুধু কলকাতা নয়, রাজ্য পুলিশেও ডিউটিরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য পুলিশে সিভিক ভলান্টিয়ারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪০ হাজারের আশপাশে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও অনেক সময়ে ‘শাসকদলের ঘনিষ্ঠদের সিভিকের ডিউটি দেওয়া হচ্ছে’ বলে অভিযোগ তুলেছে।

এর আগে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ উঠলে তার ভিত্তিতে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু, এ ভাবে ঝাড়াই-বাছাই হয়নি। এ বার আরজি করের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম জড়ানোর পরে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করতে হয়েছে লালবাজারকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *