আন্দোলনকারীদের দাবি, ওই দিন রাত ১১টার সময়ে অভীক দে কলেজের লেকচার থিয়েটারে প্রায় দেড়শো জন পড়ুয়ার সামনে জানিয়েছিলেন, আরজি করের ঘটনার পরে অকুস্থলে ছিলেন তিনি। ফলে ওই সময়ের ফুটেজ অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা।
কিন্তু ঘটনা হলো, সেই দিনের ফুটেজের অস্তিত্বই নেই। ৯, ১০, ১২ তারিখের ফুটেজ থাকলেও ১১ তারিখ লেকচার থিয়েটারে অভীক দে’র উপস্থিতির ফুটেজ মিসিং বলে জানতে পারেন ডাক্তারির পড়ুয়ারা। এর পরই বুধবার দুপুর থেকে কলেজ কাউন্সিলের সদস্যদের ঘেরাও করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের প্রশ্ন, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক থাকে অধ্যক্ষর ঘরে। তাহলে কি ঘরে বহিরাগত কেউ এসেছিল? অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় তখন জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা পুলিশ সুপার, বর্ধমান থানার আইসি এমনকী সাইবার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
যদিও বৃহস্পতিবার বর্ধমান থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বর্ধমান থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘পুলিশের কাজ তো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করা নয়। যদি সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক-সহ যন্ত্রপাতি চুরি যেত, তাহলে পুলিশ তদন্ত করত। তা ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ তো থানায় জমা পড়েনি। ফলে এ বিষয়ে পুলিশি তদন্তের প্রশ্নও ওঠে না।’
মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনরত পিজিটি গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন, ‘যে ফুটেজ বাজারে ঘুরছে তা কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্কে নেই। ১১ তারিখের ফুটেজও গায়েব। অভীক দে এসএসকেএমের পিজিটি। তাহলে তিনি কী ভাবে এখানে এলেন? তবে তিনি যে এসেছিলেন সেটা তো দেখা গেল। এর পরেও কেন এফআইআর করা হবে না?’ যদিও পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে তাঁরা শুনেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় গৌরাঙ্গ বলেন, ‘তা হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এখনও কাকে আড়াল করতে চাইছেন? আমরাও এ বার আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’
এ দিনও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে অধ্যক্ষর দাবি, ‘আমরা বর্ধমান থানার আইসিকে লিখিত ভাবে জানিয়ে বলেছি, কী ভাবে আমি ফুটেজ পেতে পারি কারণ, এটা তদন্তে লাগবে। ওই ফুটেজ অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।’ যোগ করেন, ‘পুলিশের সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরা মেনটেনেন্সের দায়িত্বে থাকা অপারেটারদেরও বলেছি আমি। ওই নির্দিষ্ট দিনের ফুটেজ কী ভাবে পেতে পারি সে বিষয়ে পুলিশ, টেকনিশিয়ান দু’তরফের কাছেই জানতে চেয়েছি।’