Sandip Ghosh,সন্দীপের সঙ্গে সাঁট? CBI নজরে সুদীপ্তও – cbi raid sandip ghosh closer tmc mla sudipta roy house


এই সময়: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগে শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়েয় বাড়িতেও হানা দিলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার সাতসকালে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার সাঁড়াশি অভিযানের মুখে পড়েন সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠরা। তার মধ্যে অন্যতম বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। সিঁথি এলাকায় তাঁর নার্সিংহোম এবং বাড়িতেও তল্লাশি চলে।অভিযোগ, ৯ অগস্ট ঘটনার পরে সন্দীপ বেশ কয়েকবার ফোন করেছিলেন সুদীপ্তকে। সিবিআই সূত্রে খবর, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বেশ কিছু নির্দেশও দেন তৎকালীন অধ্যক্ষকে। আন ন্যাচারাল ডেথ আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন শ্রীরামপুরের বিধায়ক।

সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ওই হাসপাতালের ডেপুটি সুপার আখতার আলি অভিযোগ করেছিলেন, সন্দীপ এবং তাঁর শাগরেদদের দুর্নীতির বিষয়ে সুদীপ্তকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে চাকরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখতে চাইছেন, সুদীপ্ত এবং সন্দীপের যে আঁতাঁতের অভিযোগ উঠছে, তা কতটা ঠিক।

এদিন দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ সিঁথি মোড়ের কাছে সুদীপ্তর নার্সিংহোমে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। প্রায় দেড়ঘণ্টা সেখানে ছিলেন তাঁরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সন্দীপ ফোন করে তাঁকে কী বলেছিলেন, তিনি পাল্টা কোনও নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না, সে বিষয়ে সুদীপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযোগ, টেন্ডার থেকে শুরু করে মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনা নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে সুদীপ্তর ভূমিকা সন্দেহজনক।

যদিও সিবিআই চলে যাওয়ার পরে বিধায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের তত্ত্বাবধানে এই তদন্ত চলছে। আমি সব রকমভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত।’ সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি নিজের নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছেন সুদীপ্ত।’ এদিন সেই প্রশ্নের জবাবে শ্রীরামপুরের বিধায়ক বলেন, ‘১৯৮৪ সালে আমি নার্সিংহোম তৈরি করি। এমন কিছু কাজ করেছি কি না, তা যে কেউ আমার নার্সিংহোমে গিয়ে যাচাই করতে পারেন।’

অন্যদিকে, সন্দীপের ফোনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে ওই দিন সকাল ১০ টার পরে ফোন করেন সন্দীপ, কথা হয়েছিল। সব শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। ওই মৃত্যুর বিষয়ে আপনারাও ফোন করেছিলেন, আমি বলেছিলাম, আন ন্যাচারাল ডেথ। কারণ, পিএম হওয়ার আগে কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা আমরা বলতে পারি না।’

বিতর্কিত চিকিৎসক অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাস কেন সেখানে ছিলেন, এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘আরও অনেকেই ছিলেন সেখানে। তদন্ত চলছে। বিশেষ কিছু বলতে পারব না।’ উল্লেখ্য, সুদীপ্ত একই সঙ্গে হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন। কান চন্দন, মাথা কে? আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতির নেপথ্যে একজন নয়, রয়েছেন আরও কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে শাসকদলের উত্তর কলকাতার এক প্রভাবশালী নেতাও রয়েছেন বলে সিবিআই জানতে পেরেছে।

তিনি আবার কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত। মূলত তাঁরই প্রভাবে চন্দন লৌহ নামে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি হাসপাতালের ভিতরে ফুড স্টল দিতে পেরেছিলেন। এদিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ টালা এলাকায় চন্দনের ফ্ল্যাটে হানা দেন ইডি আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, ওই ফুড স্টলটি তাঁর স্ত্রী ক্ষমা লৌহের নামে রয়েছে। চন্দনের স্ত্রীর নামে ফুড স্টল থাকলেও আসলে তার নেপথ্যে সন্দীপ ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এর আগে সিবিআইও চন্দনকে তলব করেছিল।

এদিন চন্দনের বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, উত্তর কলকাতার ওই নেতার কার্যালয়েও যাতায়াত ছিল চন্দনের। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, আসলে চন্দন হচ্ছে কান। টান মারলে মাথাও সামনে আসবে। কত টাকার দুর্নীতি? আরজি কর হাসপাতালে যে মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনা হতো বলে খাতায় কলমে লেখা থাকত, আদৌ তত খরচ হতো না বলে অভিযোগ। ঘুরপথে সেই টাকা সন্দীপের কাছে-ই চলে যেত। আবার কম টাকার যন্ত্রপাতি কিনে তা বেশি টাকার বলেও দেখানো হতো।

CBI: আরজি কর কাণ্ডে তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে সিবিআই হানা, তল্লাশি নার্সিংহোমেও

এই কাজে সাহায্য করতেন ধৃত বডিগার্ড শেখ আফসার আলি, ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরা। এদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বিভিন্ন মেডিক্যাল সরঞ্জাম সরবারহকারী সংস্থা। এদিন কালিন্দী হাউজিং এস্টেটের একটি সংস্থার অফিসে হানা দেয় ইডি। ওই বাড়িটি ভাড়ায় নিয়ে বছর দুই আগে থেকে দেবদত্ত চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি অফিস চালু করেন।

মূলত সার্জিক্যাল মেশিন সাপ্লাই করে থাকে ওই সংস্থাটি। অফিস সংলগ্ন এক বাসিন্দা দাবি করেন, ‘রাত বাড়লে অফিসে পার্টি শুরু হতো।’ বৃহস্পতিবার সকালে আবার চিনার পার্কে সন্দীপ ঘোষের পৈত্রিক বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। এই বাড়িতে সন্দীপের বাবা সত্যপ্রিয় ঘোষ থাকতেন। তবে, বাড়ির চাবি না মেলায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় তদন্তকারী আধিকারিকদের। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ফিরে যান গোয়েন্দারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *