RG Kar Hospital,কী দেখেন ক্রাইম সিনে? অকুস্থলে গেলেন বাবা-মা – cbi officers arrived rg kar hospital crime scene with doctor parents to investigate


এই সময়: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্তে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে ক্রাইম সিনে হাজির হলেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার বিকেলে নির্যাতিতার বাড়িতে যান সিবিআইয়ের অফিসারেরা। মিনিট কুড়ি পরে মৃতার বাবা-মা এবং কাকিমাকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যায় আরজি কর হাসপাতালে উপস্থিত হন তাঁরা। এরপর চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলে সকলকে নিয়ে যাওয়া হয়।৯ অগস্ট দেহ উদ্ধারের পরে কী অবস্থায় মেয়েকে দেখেছিলেন, সেমিনার রুমে কারা উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল কর্ডন করে রেখেছিল কি না, ক্রাইম সিনে দাঁড়িয়ে সিবিআই-এর গোয়েন্দারা নির্যাতিতার পরিবারের কাছ থেকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেন। প্রায় ৫০ মিনিট তাঁরা সেখানে ছিলেন।

এ দিন অবশ্য সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেননি তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। কিন্তু এতদিন পরে পরিবারের লোকেদের ক্রাইম সিনে নিয়ে যাওয়া হলো কেন? সিবিআইয়ের যুক্তি, সেমিনার রুমের পাশের ঘর ভেঙে অকুস্থল বদলের চেষ্টা হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ক্রাইম সিনে দাঁড়িয়ে অভিভাবকদের থেকে সমস্ত তথ্য জেনে তা মেলানোও হয়েছে।

এমনকী, তাঁরা সেদিন ওই ঘরের কোথায়, কী কী জিনিস দেখতে পেয়েছিলেন, তার বর্ণনাও রেকর্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে তা সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে ঘটনার পুর্নর্নিমাণও করানো হতে পারে। এদিকে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ টেস্টের পরেও বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে তার নার্কো অ্যানালিসিস টেস্টের আবেদন করে সিবিআই।

কিন্তু অভিযুক্ত তাতে বেঁকে বসায় আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। গত ৯ অগস্ট ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সেই মামলার দায়িত্ব নেয় সিবিআই। আগামী মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। তার আগে এই মামলার সমস্ত দিক নতুন করে খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। নির্যাতিতার বাবা-মা এবং হাসপাতাল কর্মীদের বয়ান রেকর্ড করার পাশাপাশি জেলে গিয়ে সঞ্জয়ের ‘টিথ ইম্প্রেশন’ নিয়েছেন গোয়েন্দারা।

অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের পলিগ্রাফ টেস্টও করা হয়েছে। তাতে বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। অন্য দিকে, সঞ্জয়ের আইনজীবী কবিতা সরকার শিয়ালদা আদালতে দাবি করেছিলেন, আরজি করের ঘটনায় তাঁর মক্কেল জড়িত নয়। ফলে, গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখতে চাইছেন, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সঞ্জয় একাই জড়িত, নাকি কারও নির্দেশে ওই কাজ করেছিল সে। এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে গিয়ে সঞ্জয়কে জেরাও করেছিলেন তদন্তকারীরা। তবে বেশ কিছু উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।

আদালতের অনুমতি না মেলায় সঞ্জয়ের নার্কো টেস্টের পরিকল্পনা আপাতত ব্যর্থ হলেও, অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না সিবিআই কর্তারা। ঘটনার পরে সেমিনার রুমের ক্রাইম সিনে একাধিক লোকের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল কলকাতা পুলিশ। এমনকী মৃতার বাবা-মা একই অভিযোগ করেছিলেন।

অকুস্থলের কাছে সংস্কারের কাজ, জানত না লালবাজার

তাঁরা জানিয়েছিলেন, তিনঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। মেয়ের দেহের চাদরও বদলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও কলকাতা পুলিশ সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা যুক্তি দেয়, ওখানে বহিরাগত কেউ ছিলেন না। এভিডেন্সও নষ্ট হয়নি। সূত্রের খবর, মূলত সেমিনার রুমের ধোঁয়াশা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে এদিন অভিভাবকদের নিয়ে ক্রাইম সিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময়ে নির্যাতিতার বাবা-মাকে আরজি কর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিল্ডিং-এর চেস্ট মেডিসিন বিভাগের থার্ড ফ্লোরে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিট নাগদ তাঁদের নিয়ে বেরিয়ে যান গোয়েন্দারা। এর আগে শুক্রবার সকালে সিবিআইয়ের গোয়েন্দা দল আরজি করের বিভিন্ন বিল্ডিং ঘুরে দেখেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ভবনেও যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে বিল্ডিং প্ল্যান থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রার সহ একাধিক নথি খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *