রাজ্য জুড়ে বন্যা-পরিস্থিতি! নদীতে হু হু করে বাড়ছে জল, যোগাযোগবিচ্ছিন্ন কামারপুকুর জয়রামবাটি… ।riverwater flowing above danger line roads inundated dam broken Flood Like Situation over bengal


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ্য জুড়ে বন্যা-পরিস্থিতি। দক্ষিণবঙ্গের নানা দিকে প্রবল বর্ষণ ও তজ্জনিত প্লাবনে বিপর্যস্ত বাংলা। বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা– সর্বত্র জল আর জল। 

এক টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃষ্টির জেরে ও বাঁকুড়ার দিক থেকে গড়িয়ে আসা জলে আবারও বিপত্তি এলাকায়।কামারপুকুর-গড়বেতা ও কামারপুকুর-জয়রামবাটি রাস্তার উপর দিয়ে জলের স্রোত বইছে। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন কামারপুকুর ও জয়রামবাটী। 

আরও পড়ুন: এবারে ঠিক কবে বিশ্বকর্মাপুজো, ১৬ সেপ্টেম্বর, না, ১৭? সঙ্গে জেনে নিন দেবতাদের ইঞ্জিনিয়রের বিশেষ মাহাত্ম্য…

খুব স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রীবাহী বাস চলাচল এ রুটে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখানকার আমোদর খালের জল উপচে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার ধানজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। হুগলি ও বাঁকুড়ার চেক পোস্টে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ ছাত্রী আবাসিক বিদ্যালয়ে জল ঢুকে গিয়েছে। লাগাতার বৃষ্টিপাত তো আছেই। অন্য দিকে, বাঁকুড়ার কোতুলপুরের দিক থেকে প্রবাহিত জল হুগলির গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে জল বাড়তে শুরু করেছে দ্বারকেশ্বর নদীতেও। আর তাতে আবারও বন্যার আশঙ্কা আরামবাগ মহকুমায়।

এদিকে নিম্নচাপের ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ধস নদীবাঁধে। আতঙ্কে এলাকার মানুষজন। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নামখানা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহারাজগঞ্জ এলাকায় আনুমানিক ৫০ মিটার নদীবাঁধে ধস নামায় আতঙ্কের সেই বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন এলাকার মানুষ।
এলাকার মানুষজনের অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই নদীবাঁধ বেহাল অবস্থায় রয়েছে। বাঁধ বেহাল থাকায় তা দ্রুত ভেঙেছে। আর ভাঙতে-ভাঙতেই নদী অবশেষে পৌঁছে গিয়েছে কূলবর্তী লোকালয়ে। জানানো হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে কয়েকদিন ধরে যেভাবে মুষলধারায় বৃষ্টিপাত চলেছে, সেই কারণেই মূলত রবিবার মহারাজগঞ্জ এলাকায় আনুমানিক ৫০ মিটার ওই নদীবাঁধে ধস নামে। এলাকাবাসীর দাবি, অস্থায়ী নদীবাঁধ না করে একটি স্থায়ী নদী বাঁধ  করা হোক সরকারের পক্ষ থেকে।

ওদিকে টানা বৃষ্টির জেরে জল বেড়েছে বীরভূমের প্রায় সব ক’টি নদীতে। ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কিউসেক জল। পাশাপাশি, ময়ূরাক্ষী নদীর জল বাড়ায় সাঁইথিয়ার অস্থায়ী ফেরিঘাটটি ভেঙে পড়েছে। এর ফলে যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

নিম্নচাপের কারণে বীরভূম জেলায় প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টির কারণে জেলার প্রায় সব নদীতেই জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে বীরভূমের দুই প্রধান নদী ময়ূরাক্ষী এবং অজয় নদীর জল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন ছোট নদীতেও জলবৃদ্ধি শুরু হয়েছে। কোথাও নদীর জল বিপদসীমার উপরে, আবার কোথাও বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে যদি আরও বৃষ্টি হয়, তাহলে জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।

অন্য দিকে, ময়ূরাক্ষী নদীর জল বৃদ্ধির কারণে সাঁইথিয়ার অস্থায়ী ফেরিঘাটটি ভেঙে পড়েছে, যার ফলে যাতায়াত একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফেরিঘাটটি মূলত সাঁইথিয়া থেকে ময়ূরেশ্বর, তারাপীঠ, রামপুর এবং বহরমপুরের মতো এলাকায় যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হত। এখন ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিকল্পপথে চলাচল করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাঁইথিয়া শহরের মধ্যে দিয়ে বিকল্প সেতু দিয়ে যাতায়াত সম্ভব হলেও, শহরের বাইরে যাওয়ার পথে যানজটের কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে শহরের মধ্যে যানজট আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে যদি পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে ঝাড়খণ্ডের ম্যাসেনজোর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়া হতে পারে, যা বন্যার আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

আরও পড়ুন: Shani Dev’s Ashirvaad: শনিদেবের বিরল আশীর্বাদে এখন থেকে সৌভাগ্যের শিখরে থাকবেন যে রাশির জাতকেরা…

ওদিকে ঝুমি নদীর জলের তোড়ে ভেঙে গেল কাঠের সেতু। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। কয়েকদিন ধরে একনাগাড়ে ভারী বৃষ্টি যার জেরে জলস্তর বেড়েছে ঘাটালের মনসুকার ঝুমি নদীতে। জলের তোড়ে ভেঙে গেল মনসুকায় ঝুমি নদীর উপর থাকা কাঠের সেতু। মনসুকা স্কুল-সংলগ্ন ঘাটের এই সেতুর সঙ্গে সংযোগ ছিল ১০-১৫ টি গ্রামের মানুষের। তৎসহ হুগলি জেলার মানুষের। আজ হুড়মুড়িয়ে সেই কাঠের সেতু জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় নদীপারের দুই জেলার মানুষের ভোগান্তি চরমে। নদী পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *